Thursday, 31 December 2020

কুড়ি-কুড়ির বিচার পাঁচালি


০২০: চললাম বুঝলি, সামলে নিস। .....

২০২১: যা বাঁশ দিয়ে যাচ্ছিস, সামলা বললেই কি আর সামলানো যাবে?  

২০২০: আরে বাবা দোষটা তো আমার নয় । করলো কেউ! ভুগছে কেউ! 
লোকজন আমাকে ভাগাবার জন্য এমন উঠে পড়ে লেগেছে যেন এই লাস্ট দিনটাও আর সহ্য করতে পারছে না। আমি যেন একেবারে দু চোখের বিষ হয়ে উঠেছি ।মনটা একেবারে ভেঙে গেছে। কত আশা নিয়ে এসেছিলাম। ২০২০, একটা স্পেশাল নম্বর । একটা  স্পেশাল বছর হবো! তা সব প্ল্যান ভেস্তে দিলো কোরোনা।
 কোরোনার গুষ্টির নিকুচি করেছে! হতভাগা , নচ্ছার !

২০২১: যাগ্গে যাবার বেলায় মন খারাপ করিস না । সব খারাপের মধ্যেও কিছু না কিছু ভালো থাকে। তোর ও আছে।

২০২০: জানি।  তা সেগুলো নিয়ে তোদের ওই হিজিবিজিকে বলনা একটা পাঁচালি  লিখতে। 
...একটু শান্তি মনে হ্যান্ডওভার করে যেতে পারি তাহলে।..

কুড়ি-কুড়ির বিচার পাঁচালি 


পৌষের মৃদু হাওয়া নির্মল আকাশ |
ধীরে ধীরে বহিতেছে মলয় বাতাস ।|
পদ্মে বসে দাবা খেলেন লক্ষীনারায়ণ,
Queens Gambit দেখে ভরেছে যে মন ।।
হেনকালে বীণা হস্তে নারদ মুনিবর ,
আসিলেন লইয়া সাথে মর্তের খবর||
কহিলেন, প্রভু মর্তে সকলে গুনিছে প্রহর,
কতক্ষনে বিদায় হবে কুড়ি-কুড়ির বছর!
মায়া লাগে দেখে তারে, একি অবিচার 
সকলের ঘৃণা দৃষ্টি, যেন সব দোষ তার।
প্রভু আনিলাম বার্তা তার আপনার সনে 
কুড়ি-কুড়ির বিচার হোক বিদায়ের ক্ষনে। ......

"সাজিয়ে স্বপন-ভরা ক্যালেন্ডারের পাতা 
আমিও খুশি মনে খুলেছিনু খাতা।
কোরোনার জ্বালায় বলো আমার কি দোষ,
আমিও ধুচ্ছি হাত, মুখেতে মুখোশ ।
আমাকে জানাতে বিদায় সয়না সবুর,
কিছু শেষ কথা বলে চলে যাবো দূর। ....
কুড়ি-কুড়ি, একসাথে বাড়ি বসে পরিজনে,
কাটিয়েছো সময় কত, এই কথা রেখো মনে !
কুড়ি-কুড়ি, ঘরে থেকে করেছো নিজের কাজ, 
ঝাড়ু পোছা সব কিছু, নেই তাতে কোনো লাজ ।
কুড়ি-কুড়ি, হেথাহোথা যাওনি অযথা ভ্রমণে,
আকাশ হয়েছে নীল, বাতাস ভরেনি দূষণে ।
কুড়ি-কুড়ি, মূল্য বুঝেছো সাধারণ ডালভাতে,
জেনেছো সবার থাকেনা তাও রোজ পাতে। 
কুড়ি-কুড়ি, দূরে থেকেও চেয়েছো আসতে কাছে, 
শিখেছো তারও কত উন্নত উপায় আছে !
কুড়ি-কুড়ি, হারানো শখগুলো ঝেড়েমুছে নতুনে,
কেউ গেয়েছো গান, কেউ রান্না যতনে! 
কুড়ি-কুড়ি, করেছো ক্ষমা, ভুলেছো অনেক দ্বেষ,
জেনেছো অল্পেও খুশি থাকা যায় বেশ ।
কুড়ি-কুড়ি, দিয়েছো সময় নিজেকেও কিছুক্ষন 
দুঃসময়, তবুও কেমন ভালো রেখেছো মন ।
কুড়ি-কুড়ি, মন্দের মাঝে যদি একবারও পড়ে মনে,
একটুকু হাসি রেখো তুলে তুমি মোর সনে ।
কুড়ি-কুড়ি, চললাম তোমাদের সকলকে ছেড়ে 
নতুন আশার সাথে সাজিও কুড়ি-একুশেরে ।"


শুনিয়া অশ্রুজলে ভাসিল দেব নয়ন,
অবিচার সত্যি, কহিলেন নারায়ণ !
কুড়ি-কুড়ি কেটেছে কষ্টে, তবু মোরা ঋণী তার ,
শিখিয়ে দিলো জীবন এক অমূল্য উপহার !

Friday, 27 November 2020

দাম্পত্য কলহ: লেডি, ল্যাডা, লুডো



 

একটা  মস্ত বড় সাদা বাড়িতে 'প্রথম লেডি' আর 'প্রথম ল্যাডা' লুডো খেলছেন। 
খুব জমেছে । কাজের চাপ এমনিতেই কম  ....দাম্পত্য কলহ না লেগে যায়। ..

লেডি  : দুই ছক্কা পাঁচ!  এক দুই তিন চার পাঁচ! আমার নীল গুটি দিয়ে তোমার লাল গুটি খেলাম। 
এবার তুমি ঘরে.  .....

ল্যাডা : মোটেই না, আমার গুটি ওখানে ছিল না। তুমি চিটিং করছো গিন্নি!

লেডি : ইসস, বললেই হলো! আমি বলে কখন থেকে ওই লাল গুটি খাবো বলে বসে আছি !

ল্যাডা : না তুমি গুনতে ভুল করেছো! You tricked me! I want a recount!

লেডি : একদম না, আমি গুনে গুনে দান দিয়েছি ! হার স্বীকার করতেই হবে। ..

ল্যাডা : কখনো না! I am flawless! I will make Ludo a great game again.....

লেডি : আহা  খেলায় হার জিত তো আছেই । sportingly হার মেনে নেওয়াও এক ধরণের জিতের পরিচয়!

ল্যাডা : খেলবোনা! ব্যাস!

[বোর্ড - গুটি তছনছ করে উঠে গেলেন ল্যাডা  । মুখ গোমড়া , ফোঁস ফোঁস ]
[নেপথ্য সঙ্গীত :   Haari baazi ko jeetna Humein aata hain..woh sikandar hi
Doston kehlaata hain......]

TV তে Niden তখন তার টিমের খেলোয়াড় বাছাই করছে । ল্যাডা আড়চোখে সেদিকে তাকিয়ে]

ল্যাডা  :  মেলু, অ মেলু , শুনছো, এ বুড়ো বলে কি! "Diplomacy is back"? তা আমি কি ডিল্পোমাটিক নই গিন্নি?

লেডি  : তুমি? ডিপ্লোমেটিক? এই কথার সত্যি উত্তর দিলে আজ দাম্পত্য কলহ লেগে যাবে! 
কিন্তু আজ আমাকে সত্যি কথা বলতেই হবে ।দাঁড়াও , বুঝিয়ে বলছি।

সেদিন সুন্দর করে মাছের মুড়ো দিয়ে ছ্যাঁচড়া বানালাম , তুমি খেয়ে বললে ,"ওয়াক থু, কি বিটকেল গন্ধ"
ঘরে নতুন পর্দা লাগলাম, দেখে বললে , "UGLY !! এগুলো কি বিছানার চাদর কেটে বানানো?"
নতুন একটা শাড়ি পড়লাম, দেখে আঁতকে উঠে বললে, "ছিঃ কি বাজে  লাগছে, তোমার চেহারায় শাড়ি মানায় না"
চুল সেট করিয়ে এলাম পার্লার থেকে , বললে, "বাইরে কি হারিকেন ? নাকি টাইফুন ? বিচ্ছিরি উস্কখুস্ক চুল"
ছেলেকে বললে "গাধার ছানা" (সেটা না হয় ok )
মেয়েকে বললে "বোকার হদ্দ !তোর দ্বারা কিস্সু হবেনা"
মিডিয়াকে বললে  "ফেক নিউজ " 
কোথাও দেওয়াল তুলে দিলে, কোথাও গ্লোবাল ওয়ার্মিং ধূলিসাৎ করে দিলে।......
এমন বানান ভুল দেশের প্রেসিডেন্ট করে? Covfefe ?
তুমি? ডিপ্লোমেটিক?

এতদিন একসাথে আছি। একটু তো শিখবে আমি কেমন করে গুছিয়ে মিষ্টি হেসে diplomatically কথা বলি ।
" প্রাণনাথ, আরেকটু ভাবো । টুইট করার আগে একটু চিন্তা করো । তুমি এত্ত বড় দেশের প্রেসিডেন্ট , এমনি ছেলেমানুষি করলে চলে? মানুষকে যা খুশি বলার আগে তাদের কথাও  শুনে নাও। মিথ্যে কথা বলা উচিত না । চুলগুলো কেটে ফেললে তোমাকে আরো স্মার্ট দেখাবে ।  ইত্যাদি ইত্যাদি।.."

আমি কি কোনোদিন বলেছি , তুমি একটি আস্ত কুমড়োপটাশ ?
নাও নাও আর গোমড়া মুখ করে বসে থেকোনা । বাড়ি বদলের অনেক কাজ। ...
আলমারির মাথা থেকে সুটকেসগুলো নামাও। .
Stop throwing tantrum(p)s and help me with packing!!

********************************************************************

মা , ওঠো ওঠো, স্কুলের দেরি হয়ে যাচ্ছে যে....
স্বপ্নটা ভেঙে গেলো। কখন অ্যালার্ম বেজেছে শুনতেই পাইনি। ....
বাঙালির গ্যাস অম্বল তো আছেই, সাথে এই স্বপ্ন-রোগটাও বেশ ভয়াবহ!

Friday, 13 November 2020

ভূত কয় প্রকার

pc:whatsapppc:Whatsapp


আসে পাশে তাকিয়ে দেখি ভূত ঘুরছে কত, 
ভাবভঙ্গি যেন ঠিক জ্যান্ত লোকের মতো !
ভূতের নানা প্রকার যদি একটু রাখো জেনে,
হুবুহু চিনে নেবে সব ব্যাকরণ মেনে !
হিজিবিজি ভেবে যদি করেছো অবহেলা,
চতুর্দশীর রাতে দেখবে ভুতুড়ে সব খেলা!


গেছো ভূত গাছের ওপর দিব্য থাকে বসে,
চাঁদের সাথে সেলফি নিতে লাফায় তক্তাপোশে !
মেছো ভূতের আজও ভালো লাগে মাছের মুড়ো,
তার বিশ্বাস চিংড়ি নাকি ইলিশ মাছের খুড়ো!
চোখ পিটপিট হুমদোভূতের কানাভুলো নাম.
মিষ্টি কচি মুন্ডু ভেবে খায় সে কালোজাম  !
মামদোভূতের দশটা আঙ্গুল একএকটা হাতে 
খুশি মনে ভাত মেখে দেয় অন্য সবার পাতে !
স্কন্ধকাটা ভূতের মাথা নেই তাও সে খাটায় ,
লোককে বলে বুদ্ধি থাকে নাকি বুকের পাটায়|
 

ভেংচিকাটা মুখে হাসে সুন্দরী শাঁকচুন্নি,
বাউল গানে ডিস্কো নাচে, বদনাম হয় মুন্নি।..
ডাইনি বুড়ি রাতদুপুরে কলপ লাগায় চুলে, 
দাঁত দুপাটি কিলিপ ভেবে খোঁপায় রাখে তুলে !
ঘেঁটোভূত আর পেটোভূত, তারা ভূত-তুতো ভাই, 
দুজন মিলে একই সাথে জাপ্টে ধরে তাই!
দশাসই ভূত সরল সোজা আছেন ব্রহ্মদত্তি, 
সাঁড়াশি দিয়ে ঘাড় মটকান রাগ নেই এক রত্তি!


এছাড়া আছে,
সাদা ভূত, কালো ভূত, বেঁটে ভূত, মোটা ভূত 
যা চাইবে তাই, 
আসে পাশের ভূত চিনে নাও, ভয় পেও না ভাই। .....


                                                                                                             

 

Saturday, 7 November 2020

কুমড়োপটাশের হিজিবিজি প্রতিক্রিয়া

কুমড়োপটাসের কি রিঅ্যাকশন হবে কেউ জানে না। .
তবে তৈরী থাকা ভালো ।



pc :FriendlyStock.com


(যদি) কুমড়োপটাশ রাগে 
খবরদার এসোনা কাছে, মাথার পোকা জাগে,
চাইবে নাকো ডাইনে বাঁয়ে, চাইবে নাকো আগে, 
বলবে কত বাজে কথা ভেবেই যে ভয় লাগে !

(যদি) কুমড়োপটাশ কাঁদে 
চোখের জল মিথ্যে কেবল, পোড়োনা তার ফাঁদে, 
হাত পা ছুঁড়ে আকাশ বাতাস ভরবে আর্তনাদে  
"দেশ ছেড়ে গিন্নি নিয়ে চলেই যাবো চাঁদে"!

(যদি) কুমড়োপটাশ হাসে 
বুঝবে আঘাত জোর লেগেছে ঠিক হৃদয়ের পাশে,
ধ্যান করবে উপোষ করে অগ্র-হায়ণ মাসে,  
তাতে যদি ভক্ত কিছু আবার ফিরে আসে !

(যদি) কুমড়োপটাশ ডাকে 
তাকিয়োনা সেদিক পানে, বুদ্ধি যদি থাকে। 
মুখোশ পরে ভয় দেখিয়ে ভোলাবে আর কাকে?
ভোট দিয়েছো সঠিক তুমি মাস্ক পরে নাকে !

(যদি) কুমড়োপটাশ ছোটে 
হেরে গিয়ে উল্টো পানে বোমার মতন ফোটে,
আদর করে খেওনা চুমু কমলা গালে ঠোঁটে,
গত চার বছরে কি করেছে ভুলে যেওনা মোটে!

তুচ্ছ ভেবে এসব কথা যদি করেছো অবহেলা,
কুমড়োপটাশ আসবে ফিরে, বুঝবে তখন ঠেলা!
দুলে দুলে পাঁচালিতেও পাবে না তখন পার,
হিজিবিজি তাই সচেতন করছে  বারংবার !



#কবি ক্ষমা কোরো 

Monday, 2 November 2020

Grump-পাঁচালি


pc: TheGuardian.com

{ পাঠকের কাছে অনুরোধ দুলে দুলে পড়ুন }

হেমন্তের মৃদু হাওয়া নির্মল আকাশ |
ধীরে ধীরে বহিতেছে মলয় বাতাস ।|
পদ্মে বসে চিন্তিত মুখ লক্ষীনারায়ণ,
মর্তের চিন্তায় তাঁদের হোল ভ্রুকুঞ্চন| ।।
নারায়ণ কন, প্রিয়ে দেখে লাগে ভয়,
এতো বড় দেশে কাল না জানি কি হয়।।
মর্তে বসে নরনারী গোনে প্রতিক্ষণ,
কি হইবে ভাবিয়া ভয়ে হয় শিহরণ ।।
শুনিয়া মা লক্ষী বাড়াইলেন পাখা,
"উপোষ করিয়া কাল খাবো সাবু মাখা"

হেনকালে বীণা হস্তে নারদ মুনিবর ,
আসিলেন লইয়া সাথে মর্তের খবর||
কহিলেন প্রভু মর্তের কি করিবো বর্ণন 
কোভিডের নৃত্য, সাথে US নির্বাচন!
রিপাবলিক ডেমোক্র্যাট করে চুলোচুলি 
জনগণ মাতিয়া তাতে সবকিছু ভুলি !
প্রভু, ছোট মুখে বড় কথা বলিতেই হয়,
হেরিলাম মানব এক বদ অতিশয় ।।
কি করিয়া সৃষ্টি এমন করিলেন এক পিস্ 
ফর্মুলা ভুল নাকি গণনাতে মিস?
কমলা মুখের রং, বাহারিয়া কেশ,
তিলে তিলে অকপটে ভাঙিতেছে দেশ .
সন্দেহ, দ্বেষ আর শুধু বিভাজন,
দেওয়াল গড়িয়া ভাগ করে জনগণ।
টুইটিয়া টুইটিয়া কত মিথ্যের ঝুড়ি 
অবান্তর কথায় দেখি নাই তার জুড়ি। ...
এহেন মানবেরে বসায়ে সিংহাসনে 
আপনারা দেবদেবী শান্ত কেমনে?
প্রভু এরে দয়া করে দিন নির্বাসন,
ভক্তেরা ক্ষির দিয়া করিবে পূজন। .

নারায়ণ মৃদু হেসে বলিলেন, মুনিবর, 
আতঙ্কে আছি, ভক্তরা খুঁড়িছে কবর।।  
আমাদের BP বাড়ে, দেখি কান্ডখানা, 
যমেও অরুচি বলে করিল যে মানা ।।
অতঃপর শেষ চেষ্টায় দেবদেবীগন,
রাত জেগে পাঁচালি আজ (আমরাও) পড়িব খন............... 
.........কাল কুছ ভি হো সকতা হ্যায়। ....

Monday, 24 August 2020

লক লকে লকডাউন

সবজিটা কোনোদিনই তেমন ভালো লাগতোনা। তোমাদের তো আগেই বলেছিলাম।

কুমড়ো পুজো : বাংলায় যাকে বলে Halloween 

কিন্তু সেই কুমড়োই যে লকডাউনের বাজারে আমার জীবনের এত বড় অংশ জুড়ে বসবে তা কল্পনাও করতে পারিনি। 
Covid-19 শিখিয়ে দিলো , লাইফ মে কুছভি হো সকতা হ্যায়   .......

সত্যি বলতে কি আজকাল সবজিটা খেতে ভালোই লাগে (নিন্দুকেরা বলবে বয়স হয়েছে, আমি কান দেবোনা)। 
মায়ের হাতের নানা রকম রোজকার রান্না নতুন করে শিখে বানাতে ইচ্ছে করে । ছোটবেলায় অবশ্য নাক সিঁটকেছি প্রচুর, আবার  "বড় বড় চোখের' ভয়ে চুপচাপ গিলেও নিয়েছি । Appreciate করেছি অনেক পরে। .
সে যাগ্গে, গপ্পোয় ফেরা যাক  ....

লক ডাউনের শুরুর দিকে একদিন বাড়িতে কুমড়ো আনা হয়েছিল । কুমড়োটা খেয়ে, কুমড়োর বীজগুলো কোনো কারণে ফেলতে পারিনি (নির্ঘাত Halloween-দেবী ভর করেছিলেন)।  জানলার ধারে বেশ কিছুদিন শুকোনোর পর, একদিন অবহেলায় ওদের পুঁতে দিয়েছিলাম বাগানের এক কোণে। 
Without any expectation .....

কয়েকদিনের মধ্যেই সুন্দর কয়েকটা পাতা এবং এখন লকলকে কুমড়ো গাছ। যাকে বলে লকডাউনে লকলকে  😀
.....and Life has completely changed after that ;-)



ঘুম থেকে উঠে প্রথমে তার দর্শন। 
তারপর দিনের মধ্যে কিছুটা সময় তার যত্ন করা, কিছুটা সময় সুন্দর করে তার ছবি তোলা আর বাকিটা সময় ভাবা কি বানিয়ে খাবো. ....
কুমড়ো পাতায় চিংড়ি পাতুড়ি , নাকি কুমড়ো ফুল ভাজা, নাকি কচি ডগা পোস্ত  নাকি অপেক্ষা করবো কুমড়োর?
Dilemmas of life.......



কুমড়োর ডগা বাড়ছে নেদারল্যান্ডস এর মাটিতে আর ইন্ডিয়াতে বসে চারজন সিনিয়র সিটিজেন তাই নিয়ে খুবই উত্তেজিত! 
প্রত্যহ কুমড়ো গাছের growth chart Whatsapp এ চেপে চলে যাচ্ছে জামশেদপুর এবং কলকাতায় । 
"Breaking News: আজকের বিশেষ বিশেষ খবর হলো কুমড়ো গাছের ডগায় আরেকটি পাতা বেরিয়েছে এবং ৩ নম্বর  ফুলটিতে একটি মৌমাছি বসতে দেখা গেছে।"
আমার তো মনে হয় যতক্ষণ না রোজ ছবিটা পৌঁছয়, আমার বাবা জলস্পর্শ করেন না !!
কখনো বা উত্তেজিত "বাহ্", কিংবা "যদি খাস তাহলে ডগাগুলো ঠিক এক হাত কাটবি, not more" কিংবা "মায়ের থেকে জেনে নে চচ্চড়িতে কি দেয়" কিংবা "নাঃ, ভেবে দেখলাম তোকে একটা মাচা বানাতেই. হবে" ইত্যাদি ইত্যাদি । 
আমার মায়ের ফোকাস কিন্তু কুমড়ো গাছের বিভিন্ন অংশের সম্পূর্ণ ব্যবহারের দিকে । ফুল, পাতা, ডাঁটা ..কিছু যেন বাদ  না যায় ।এই তো আজ পোস্ত আর কচি ডাঁটা পাতা দিয়ে একটা রেসিপি দিয়েছেন । মেয়ে রান্না করে ছবি পাঠালে তবে কিনা নিশ্চিন্তি ...

কলকাতা থেকে শাশুড়িও ভিডিও কল করে কুমড়ো গাছটিকে বার কয়েক নিরীক্ষণ করেছেন। চিন্তা একটাই। কুমড়ো অবধি যেন ব্যাপারটা গড়ায় । আজকে ফোনে মাচা বানাবার একটা অভিনব উপায় বললেন আমাকে (কি জানি কাল রাতে ঘুমিয়েছিলেন কিনা!)। 
"কাচা জামাকাপড় মেলার স্ট্যান্ডটাকে বরং মাচা বানিয়ে ফেল, সুন্দর কুমড়ো হবে"
স্বশুর মশাই অল্প কথার মানুষ। প্রথম প্রশ্নে আমাদের কুশল জেনেই পরের প্রশ্ন, "ওটা কি মিষ্টি কুমড়োর গাছ?"

আমার বাবা এককালে খুব বাগান করতেন। ছোটবেলায় দেখেছি বাগানে আলু, মটরশুঁটি আর দারুন গোলাপ হতো।
নেদারল্যান্ডস এ বেড়াতে এসেও বাবা আমাদের বাগানে টমেটো এবং পালং শাক প্রচুর চাষ করেছিলেন।
আজকাল বাবার সাথে প্রাত্যহিক টেলিফোন কলের প্রথম টপিক ভাইরাসের গুষ্টির তুষ্টি । তার পরের টপিকই হলো বাগান আর বাগানে কুমড়ো গাছ ।

আজকে প্রাত্যহিক আলোচনায় যাকে বলে উত্তেজনার চরম । 
"শোন কুমড়ো হলে, তার বীজগুলো ফেলবিনা। শুকিয়ে, তারপর অল্প ফুটিয়ে সেই জলটা খেলে Cholesterol কমবে। আজকেই  টিভিতে দেখাচ্ছিল "

'গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল' শুনেছিলাম । 
লক ডাউনের বাজারে দেখছি 'গাছে কুমড়ো, হৃদয় Cholesterol-free '
😀

মায়ের রেসিপি : ডাঁটা পাতা পোস্ত ভাপা  
গরম জলে ভালো করে কুমড়ো পাতা ধুয়ে নিলাম। তারপর ফুটন্ত গরম জলে খানিক্ষন ভিজিয়ে রাখলাম।
তারপর ডাঁটা পাতাগুলো  খানিক কুচিয়ে নিলাম ।
এবার একটা বাটিতে ডাঁটা পাতা, এক চামচ সর্ষের তেল, বাটা পোস্ত এবং স্বাদ মতন নুন মেখে নিলাম।
একটা বড় বাসনে জল গরম করে তার মধ্যে এই মাখা সমেত বাটি (ঢাকনা সমেত) বসিয়ে দিলাম। ২০-২৫ মিনিট মতন ভাপিয়ে, নামিয়ে ৩-৪ চামচ সর্ষের তেল ওপর থেকে আর গোটা দুয়েক লঙ্কা ।
গরম সাদা ভাতে পরিবেশন।............
অতি সুস্বাদু  ...এবার পরের রেসিপির অপেক্ষা ।
কুমড়োর আগা খাবো, ডগাও খাবো. ......






 

Sunday, 16 August 2020

আলমারিতে লকডাউন - তাহাদের কথা


আজ অনেকদিন বাদে বাড়ি থেকে বেরোবো । 
গত কয়েকমাসের লকডাউনের পর আজ ঠিকঠাক সাজুগুজু করে বেরোবার প্রস্তুতি।
জামা বার করবো বলে আলমারি খুললাম । 
আলমারির দরজা খুলতেই জামাকাপড়গুলো প্রায় আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো।
" আমাকে, আমাকে, আমাকে "
[তোমরা তো জানোই আমি আবার "তাহাদের কথা" শুনতে পাই.....]


কোরাস 
গত ছয় মাস, বসে হাঁসফাঁস 
যেন কারাগারে বন্ধ,
খেয়ে থতমত, ঠেসাঠেসি যত, 
সোঁদা কাপড়ের গন্ধ ! 
কেঁদে কেঁদে হায়, মোরা মৃতপ্রায়,
কিছুই নেই যে আর কাজ,
ইস্ত্রির সেঁকহীন, কিভাবে কাটছে দিন,
ভাঁজে ভাঁজে ব্যথা আজ!

 সিল্ক :
আমি দীপ্ত, আমি উজ্জ্বল, ভাবছিস তুই কিরে?
আমায় পরে  বেরোলে আজ দেখবে সবাই ফিরে। ....

কটন :
গরমের এই দিনে, আমি দিলখুশ ফিনফিনে,
আমায় পরে বেরোলে আজ, সবাই নেবে চিনে। 

সিফন  :
লকডাউনের মলিনতা উড়িয়ে দিতে পারি,
আমায় পরে  জগৎ ঘুরে ফিরবি আবার বাড়ি। ...

সামনের তাকে দেখি Jeans আর nightdress মিটিমিটি হাসছে। 
আমার সাথে চোখাচোখি হতেই বললো:

"আমরা দুটি ভাই, কোনো প্রব্লেম নাই...
খুব ব্যবহার হই দুজনা, তাই রে নাই রে নাই......"

[Nightdress]
 জন্ম আমার ছিলো শুধুই, রাতের আরাম দিতে,
দিনের জামা রোজ দেখতাম ফেসবুক সেলফিতে !
কোরোনাতে দিনের জামা আলমারিতে ঠাসা,
চব্বিশ ঘন্টা পরণে আমি, এমনি ভালোবাসা!

[Jeans]
বাইরে যাওয়া বলতে কেবল সবজি মাছের বাজার 
কি দরকার তার জন্য গুছিয়ে বসে সাজার?
পরনে তাই গলিয়ে আমায় কাজ হচ্ছে সারা,
ফ্যান্সি এবং পলকা যারা, বন্ধ কেবল তারা !

.....আজকে বেশ গরম। হাত বাড়িতে কটন ড্রেসটা বার করে নিলাম।













Tuesday, 16 June 2020

হ্যাপি বার্থডে

মন বলে, সত্যি বুঝি,
নাকি আমার  ভুল?
মাথা বলে, সত্যি, নাতো 
পাকছে কেন চুল?

মন বলে, বলিস কিরে
গড়ালো এতো জল ?
মাথা বলে, তাইতো কেমন 
হাঁটু ব্যথা বল!

মন বলে, দুত্তারিকা
এখনো প্রেম জাগে,
মাথা বলে চশমা ছাড়া
ঝাপসা কেন লাগে?

মন বলে, বিশ্বাস কর
এখনো উঠি নেচে,
মাথা বলে, ভীমরতি
বিপদ ডাকিস যেচে।..

মন বলে, তর্ক বৃথা
করিনা কাউকে ভয়,
মাথা বলে, এই বয়সে
অমন একটু হয় !

মন বলে, নিজেকে খুশি
রাখতে যদি পারি,
মাথা বলে, উপায় বল
শিখবো তাড়াতাড়ি !

মন বলে, দুইখানা গ্লাস 
দৌড়ে দেখি আন,
মাথা বলে, তোর জুড়ি নাই
হ্যাপি বার্থডে মেরি জান !

Cheers!!!






Tuesday, 2 June 2020

মুড়ির প্রত্যাবর্তন



I am a global citizen, no doubt.
কিন্তু আমি ঘটি।😀
শুধু তাই নয়, আমি হার্ড -কোর বাঁকড়ি। অর্থাৎ মুড়ি এবং পোস্ত আমার রক্তে আছে । সামনে বিরিয়ানি আর পোস্ত রেখে বাছাই  করতে বললে, আমি চোখ বুজে পোস্তর দিকে হাত বাড়াবো।
গরম ভাত. পোস্ত বাটা, সর্ষের তেল, নুন, কাঁচা লঙ্কা! ব্যাস. .......
চোখ বুজে Nirvana !

তা এহেন গ্লোবাল বাঁকড়ির জীবনে মুড়ি ফিরে এলো লকডাউনের বাজারে।With a bang!
মুড়ির প্রত্যাবর্তন !
মুড়ি যে আমার বরাবর অত্যন্ত প্রিয় ছিল ঠিক তা নয় । বরং ছোটবেলায় বিকেলের জলখাবারে মা মুড়ি দিলে বেশির ভাগ সময় মুখ বিকৃত করেছি। তারপর চুপচাপ খেয়েও নিয়েছি ।
(ও বাবা, ওই চোখ তো দেখোনি, এখনো ভাবলে গা শিউরে ওঠে ভয়ে)
😁
তবে ট্রেনের ঝালমুড়িটা অবশ্য বরাবরই  প্রিয়।ট্রেনে উঠে থেকে মনটা উশখুশ করতো কখন উঠবে ঝালমুড়ি।
মেখে, ঝাঁকিয়ে, ঠোঙায় দিয়ে ওই যে লাস্ট এ একটা নারকোল গেঁথে দিতো!! ....আহা, অমৃত!

যাগ্গে যা বলছিলাম, এই লকডাউনের বাজারে শুরু হলো অনলাইন শপিং ।
অনলাইন ইন্ডিয়ান দোকান থেকে অন্যান্য জিনিসের সাথে আনানো হোল  এক প্যাকেট মুড়ি । হল্যান্ডে আজ বহু বছর মুড়ি কেনা হয়নি।কখনই বা খাবো? অফিস থেকে ফিরেই ডিনার খেয়ে নেবার অভ্যেস হয়ে গেছিলো বহুদিন ।

গত সপ্তাহে একদিন দুপুরের দিকে মিটিংয়ের ফাঁকে পেটে গুড়গুড় করে আওয়াজ হলো । খিদে । মনে পড়লো আরে. বাড়িতে তো মুড়ি আছে।
কর্তাকে জিজ্ঞেস করলাম, মুড়ি খাবে?
বেশ রাজসিক স্টাইলে বললো,  খেতে পারি তবে আলু সেদ্ধ দিয়ে মাখলে ভালো হয়....
(মানে খেয়ে, মুড়িকে এবং আমাকে ধন্য করা)
খুব যত্ন করে মাখলাম। পেয়াঁজ, লঙ্কা, শশা, আলু সেদ্ধ, চানাচুর, সর্ষের  তেল ।
তৃপ্তির সাথে খেলাম দুজনেই।
ওমা, পরের দিন শুনি কর্তা  ফোনে মা কে বলছে, "মুড়িটা আমার তেমন ভালো লাগেনা, চিবোতে চিবোতে মাথা ধরে যায়। ..."

পরের দিন তিনটে নাগাদ আবার খিদে।..আমি সেদিন মুড়ি মাখলাম বাদাম দিয়ে।
আবার জিজ্ঞেস করলাম, মুড়ি মাখছি , খাবি?
বললো ,"দে........ , খাই"
এক বাটি ভ্যানিশ ! মাথা ধরার কোনো চিহ্ন তো দেখলাম না.......

পরের দিন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ।এবার মুড়িতে ছিল ছোলা আর পেয়াঁজ। 
আবার ভ্যানিশ।


আজকের  ঘটনা কিন্তু একটু অন্যরকম । আজকে বাড়িতে না আছে চানাচুর, না আছে বাদাম , না আছে ছোলা।
আজকে প্রকাশ পেলো আসল বাঁকড়ির বাঁকড়িত্ব । হলো রক্তের পরীক্ষা !

[Flashback ]
মনে পড়ে গেলো বাঁকুড়ার গ্রামের বাড়ি । আমরা সবাই মিলে হৈহৈ করে যেতাম দোলের সময় ।
সকালে ব্রেকফাস্ট এ মুড়ি। তবে বাদাম ছোলা দিয়ে ঝালমুড়ি বানিয়ে নয়।
বড় পাত্রে মুড়ি আর সাথে দোলের মেলা থেকে এনে গরম গরম আলুর চপ। 
এবার আসি খাওয়ার কায়দায়।
প্রথম দু এক কামড় চপে । একটু চিবিয়ে তারপর মুঠো করে মুড়ি অল্প দূরত্ব থেকে মুখের মধ্যে ছুঁড়ে দেওয়া ।
এমনি ভাবে কিছুটা খেয়ে যখন বাটিতে একটা চপ বেঁচে তখন চপটাকে মুড়ির সাথে মেখে ফেলা। মুড়ি পুরো হলুদ, অল্প ভেজা ভেজা, ঠিক যেন তরকারি দিয়ে মাখা। অনেকে আবার সামান্য জল দিতেন তাতে । একটা সোঁসোঁ করে আওয়াজ হতো.....মুড়ি জল টানছে।
তারপর সেটা জমিয়ে খাওয়া।উফ কি দারুন স্মৃতি! 
সেই আলুর চপ একবার বেশ কয়েকটা খেয়ে যা কান্ড হয়েছিল।..গ্রামে তখন টয়লেট ছিল না।  সে আরেক গল্প, বলবো আরেকদিন । আজকে মুড়িতে ফোকাস।

আজকে আমার ফ্রিজে ছিল ফুলকপির তরকারি ।
কর্তাকে বললাম , মুড়ি মাখার আজ কিছু নেই , আমি তরকারি দিয়ে খাবো। খাবি?
অবাক চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললো, "তরকারি দিয়ে? নাহ ! "

হার্ড-কোর বাঁকড়ি তৃপ্তির সাথে এক বাটি মুড়ি মেখে খেলো তরকারি দিয়ে। ..
Nostalgia  can be so sweet!

বাটিতে ভরে মশলা মুড়ি,
পাকলে খায় ফোকলা বুড়ি !
মুড়িতে কটা বাদাম ভাজা,
গুনতে বলেন পাগলা রাজা ।
মন্ত্রীমশাই যদিও কুঁড়ে, 
ছাঁচি পেয়াঁজ আনেন খুঁড়ে। 
সেনাপতির মুখে ঢাল,
মুড়িতে নাকি বড্ড ঝাল, 
এমন সময় দমকা হাওয়া,
উড়লো মুড়ি, ভন্ড খাওয়া!





Thursday, 2 April 2020

হুঁকোমুখো হ্যাংলা (বাংলা)

Risking Coronavirus Amid Lockdown, Kolkata Rushes To Sweet Shops

https://www.ndtv.com/kolkata-news/risking-coronavirus-amid-lockdown-kolkata-rushes-to-sweet-shops-2203893

pc: ndtv

[কবি ক্ষমা করবেন]

হুঁকোমুখো হ্যাংলা,  বাড়ি তার বাংলা,
মুখে তার হাসি নাই দেখেছো?
নাই তার মানে কি? কেউ তাহা জানে কি?
সামনে কি সন্দেশ রেখেছো?

কোথা পাবে দানাদার, এ কেমন অনাহার
মিষ্টির অভাবে যে দিশেহারা ,
তাই বুঝি একা সে, মুখখানা ফ্যাকাশে,
বসে কাঁদে হুঁকোমুখো বেচারা !

নলেনের পায়েসে, চোখ বুজে আয়েসে,
ক্ষীর-কদমে যার  ফুর্তি,
জীবন জিলিপি বিনা, লেডিকেনি পাবে কিনা,
ভেবে তার  কাচুমাচু মূর্তি ।

পান্তুয়া দুইখানা, এক মুঠো মিহিদানা
লবঙ্গলতিকা দ্যাখে স্বপনে,
একুশটা গোটা দিন, এমনই মিষ্টিহীন
হুঁকোমুখো একা কাঁদে গোপনে ।

চমচম সুস্বাদু , মুখেতে মেলায় জাদু
হৃদয়ে জাগায় সে আলোড়ন,
কালোজাম বোঁদে ওই, ভাঁড়েতে মিষ্টি দই
বাঙালি মিষ্টি-প্রেমে আমরণ !

ভালোলাগে খেতে অতি, নাই আজ কোন গতি
দোকান যে আজ সব বন্ধ,
মিষ্টির শোকে হায়, বাঙালি মৃতপ্রায়,
জীবন যে হারায়েছে ছন্দ!

হুঁকোমুখো হেঁকে কয়, কারুকে করিনা ভয়,
শুধু শুধু করিসনে হল্লা,
কোরোনা-ফোরোনা সব, দেশ জুড়ে অতিরব
শান্তিতে খাবো রসগোল্লা!

হঠাৎ আকাশে আলো, দেখে হয় মন ভালো
দেখা দেন দেবী, হাতে কালাকাঁদ,
"কোরোনার ভয় রাখ,লকডাউন নিপাত যাক
এ নেহাতই শত্রূর পাতা ফাঁদ"  !

এরপর তেলেভাজা, কিংবা ফুলুরি তাজা
হুঁকোমুখো জানালো যে আবেদন ,
দেবীর স্মিত হাসি, "তোদেরকে ভালোবাসি
দাঁড়া ব্যবস্থা করছিক্ষন" !!

বিবেক: 
নাই বা খেলি মিষ্টি কদিন, কিসের হতো ক্ষতি ?
রক্তে ভরা সুগার তোদের, তাতেও এই দুর্মতি? 
দুধের যদি এতই জোগাড়, হচ্ছে অপচয়,
খিদেয় যারা কাঁদছে তাদের খাইয়ে দিলেই হয়......... 





Tuesday, 25 February 2020

Namaste-Howdy

pc: indiatoday















রাজা কয় রাজারে
আহা মরি বাহারে ,
দেশখানা অপরূপ,
খাসা বলে যাহারে!

রাজা কয় রাজারে,
বলি আর কাহারে?
সম্পদ ভরা আছে
নদী বন পাহাড়ে !

রাজা কয় রাজারে
লাগে বাজে, আহারে
না বুঝে প্রজা কেন
ধ্বংসায় তাহারে!

রাজা কয় রাজারে
আয় বসি আহারে,
সামোসাতে ব্রকোলি
শুনে ওম সাহারে !

রাজা কয় রাজারে
তাজ দেখে ভায়ারে
গিন্নির প্রেমে ডুবি
নাই কোনো ভাষারে !

রাজা কয় রাজারে
fake news বাজারে,
আমি নাকি টুইট করি
বোকা এলোপাথারে!

রাজা কয় রাজারে
fake কহি কাহারে
টুইট তোর মাঝ রাতে
পড়ে হাসি হাহারে !



Friday, 21 February 2020

দাম্পত্য কলহ -মহাশিবরাত্রি

ভক্তরা দুধ মিষ্টি ফুল ফল ঢেলেছে শিবের মাথায় । জটা চ্যাটচ্যাট করছে ।
মা দুগ্গা গজ গজ করতে করতে শ্যাম্পু করে দিচ্ছেন। 



pc:pinterest


মা:
বুঝিনে বাপু মর্তে কেন উড়িয়ে রাতের ঘুম,
উপোষ করে তোমার মতন স্বামী পাবার ধুম!
একরাশ জটা, ফনার ঘটা, কোনটা ভালো লাগে!
চোখ ঢুলু ঢুলু, বাঘছাল ছাই, তবুও প্রেম জাগে?
চারিদিকে আজ 6-প্যাক আর Josh-ভরা প্রাণ,
মন কেড়ে নেয় হ্যান্ডসম dudes ভিকি আয়ুষ্মান !

বাবা:
সবাই কি আর তোমার মতন অস্ত্র নিয়ে খাড়া ?
পান থেকে চুন খসলে পরে জাগিয়ে তোলে পাড়া !
আমার জটা যুগ যুগ ধরে এখনো চলছে হিট,
পুচকে ছেলের 6-প্যাক নিয়ে দুদিনের খিটখিট !
ভোলাভালা নির্ঝঞ্ঝাট স্বামী কে না বলো চায়?
গিন্নি,
তোমার মতন ভাগ্য করে কয়জন তা পায়!

মা:
ইইইস, ভোলাভালা নির্ঝঞ্ঝাট ঠিক বলেছো বটে,
থাকো এমন চুপটি করে, প্রচুর বুদ্ধি ঘটে!
নন্দী ভিঙ্গি ডাক দিলে কিছুই থাকে না মনে,
আমি কিছু বললে পরে কে কার কথা শোনে!
কাজের বেলায় জটা কেন, দেখতে পাইনা টিকি
সব কিছু আমার ঘাড়ে, হেল্প নেই এক সিকি !

বাবা:
হেল্প করার চেষ্টা কি আর করিনি আমি আগে?
যাই করেছি খেঁচানি কেবল জুটেছে আমার ভাগে।
বাজার গেলে দোকানি নাকি ঠকিয়ে করে ভূত ,
কুমড়ো পটল যাই আনি,কোনোটারই নেই জুত!
হাতা খুন্তি ধরলে বলো সময়ের অপচয়,
তান্ডবে মোর জগৎ নাচে, তোমার পছন্দ হয়?

মা:
ছেলেমেয়ের পড়াশোনা, কিংবা দোকান বাজার,
কোনোটাতেই হাত না দেবার অজুহাত দাও হাজার!
আমি সারাদিন খেটে মরি, খিটখিটে আর বাজে,
তুমি 'cool dude' ডুগডুগি নিয়ে ভোলাবাবার সাজে !
শিবের মতন বর পাই যেন, চারিদিকে কলরব,
যে যাকে নিয়ে করে ঘর, শুধু সেই বোঝে সব !

বাবা:
আমার মোটে দুই খানা হাত, তোমার আছে দশ,
তোমার মতন multitasking কজন পারে Boss?
জানোই তো, আমি কেমন অচল তোমায় ছাড়া,
কোনো কাজটাই সঠিক ভাবে হয়না আমার দ্বারা !
তোমার শক্তি, তোমার সাহস, অসুরেও হার মানে,
তোমার মাথা ঠান্ডা কেমন, কে আর না জানে?
[মায়ের মুখে অল্প হাসি ] .......

Jokes apart গিন্নি,
ভক্তদের বুঝিয়ে বলি, মর্তের যা করেছিস হাল, 
আমার মাথায় জল না ঢেলে নিজের মাথায় ঢাল !
মাথা ভরা ঘিলু দিলাম, লাগাবি বলে কাজে,
তবুও ভন্ডদের কথায় নাচিস তোরা বাজে। 
এক ঘটি দুধ আছেই যদি, দে শিশুর হাতে তুলে,
মানুষের মুখে হাসি ফোটা, আমার মাথা ভুলে  !

[গিন্নি কে ]
গিন্নি, তোমার ওই হেয়ার ড্রায়ারটা দিয়ে একটু জটাগুলো শুকিয়ে দাও দিকি।....
ডিনারে আজকে সাবুমাখা  তো? 
Diet-সন্দেশ দিয়ে মেখো, বয়স হচ্ছে! 
আজ গ্যাস, কাল কনস্টিপেশন। .... আর ভালো লাগেনা !