Tuesday 1 October 2019

"Local " দশভুজা



যাচ্ছি আমি বাপের বাড়ি, সঙ্গে ছেলে মেয়ে,
সারা বছর বসে থাকি এই দিনের দিকে চেয়ে ।
গুছিয়ে শাড়ি, গুছিয়ে বাড়ি দেব আমি পাড়ি ,
বছরে এই একটি বারই যাই যে বাপের বাড়ি । 
শিবুকে বলি চলোনা সাথে, তুমি মর্তের জামাই,
তার নাকি কৈলাশে কাজ করা যাবেনা কামাই ।
পুজোর ধুতি দিলেম কিনে তবু ও বাঘের ছাল
নন্দী ভৃঙ্গী ভূত দুটোতেই করেছে  এই হাল ।
মর্তে যাবার রাস্তাও তো লম্বা খানিক বেশ
নৌকা, ঘোড়া, ট্রেনে চেপেও রাস্তা হয় না শেষ ।
চার চারটে বাচ্চা নিয়ে ট্রাভেল কি আর সোজা?
আমিও খাই হিমশিম ওরে  যদিও দশভূজা ।
গনেশ আমার সাধাসিধে কিন্তু পেটুক বড়,
চপসিঙ্গারা খাবে রাস্তায় যতই বারণ করো  ।
বোঝাই কত, এই বয়সে বাড়ছে কেন  ভুঁড়ি,
ঘিয়ে ভাজা লাডডু খেতে নেই তবু তার জুড়ি!
সরস্বতী উঠেই ট্রেনে বইয়ের ভেতর মুখ,
পাইনা ভেবে পড়াশোনায় কিসের এত সুখ ।
ঘরের কাজে ছিটেফোঁটাও নেই কোনো তার মন,
শিবু বলে, chill গিন্নি, ঠিক শিখবেখন ।
লক্ষী আমার ব্যাগ সামলায় টাকা পয়সা বিল
এক নয়াও হিসেবে কিছুর হয়না গড়মিল।
চাল ডালের ভাঁড়ার সবই রাখে সঠিক ভরে,
এক পাতা অঙ্ক দিলেই , তখন মাথা ঘোরে  !
কার্তিকটা বড়ই ফাজিল  এদিকওদিক চোখ,
সব স্টেশনে নামা চাই ওর, ভিড় যতই হোক।
ফিনফিনে গোঁফ বাবরি চুলের বাহার দেখে ভাবি ,
মায়ের চোখে ফাঁকি দিয়ে কোথায় বা আর যাবি ?
এরওপর এ আছে সবার নিজের নিজের pet,
তাতেই যাবে সময় খানিক করতে তাদের set।

যাকগে এসব সংসার কথা থাকি কদিন ভুলে,
'ঘর ঘর কি কাহানি' রাখি নাহয় তুলে ।
মর্তে সবাই আহ্লাদে উঠবে কেমন মেতে ,
তাই তো লাগে ভালো আমার বাপেরবাড়ি যেতে ।
আমার মতন দশভুজা সেথায় ঘরে ঘরে,
আমার সকল আশীর্ব্বাদ রইলো তাদের তরে।
দুইটি হাতে হাসি মুখে সামলে চলেছে ধরা,
তারাই শক্তি, হৃদয় তাদের ভালোবাসায় ভরা !
ঘরে ঘরে এই মেয়েদেরই সম্মানে করো পূজা,
এরাই হলো  মর্তলোকের "Local" দশভুজা !