Monday 20 November 2017

Choose your battles wisely yaar!!!


pc: quotemaster.org


দমবন্ধ হচ্ছে দেশের, মাস্ক লাগছে মুখে,
নিঃশ্বাসে বিষ,তবু দেখো নেতা ঘুমোয় সুখে!

জগৎসুন্দরী মুকুট, আনছে দেশের মেয়ে,
প্লাটফর্মে কমলা ঘুমোয় আধপেটা জল খেয়ে!

যুবক পাগল পড়ার চাপে, কাটছে কারো গলা ,
হারায় শৈশব বইয়ের তলে, মিছে এসব বলা!

রানী বলে হায়রে কপাল,মরেও শান্তি নাই,
ইতিহাসের পাতায় বেশ তো ছিলাম ভাই।
পদ্মাবতী তোদের ঘরে, আঁচলে মুখ ঢাকা,
আমাকে নিয়ে ধর্ণা, তার বেলা সব ফাঁকা ?
আমার মান এতই প্রিয়,আমি তো ইতিহাস,
ভবিষতের পদ্মাবতী মায়ের পেটেই নাশ?

ভুলভাল লড়াই এ মেতে জীবন অপচয়,
ভোটপূজাটাই আসল? মানবিকতা নয়?

দিবিই যখন ধর্ণা তোরা, করবি অনশন,
ভেদাভেদ ঘুচিয়ে দেবার কর না তবে পণ!

ভাব না বরং কোন সমস্যার করবি প্রতিকার,
বুদ্ধি যখন আছে ঘটে, Choose your battles wisely yaar!!!

Sunday 22 October 2017

জাপান কাহিনী ৪ :পুলিশ!! পালাও!!


জাপান এর কথা মাঝে মাঝেই মনে পড়ে । মনে হয় যেন আগের জন্মের কথা ।
(জাপান কাহিনী ১ , ২,৩  প্রকাশিত)

আসলে জীবনের নানা ঘটনার সাথে নানা স্মৃতি জড়িত থাকে। সুযোগ সুবিধে বুঝে সেই স্মৃতি আবার উঁকি মারে। এমনি এক লুকোনো স্মৃতি হঠাৎ উঁকি মারলো দুর্গাপুজোর সময়, ভাবলাম লিখে ফেলি।

২০১৭। সেপ্টেম্বর মাস ।
হল্যান্ডে বসে অষ্টমীর দিন ভোগ খাচ্ছিলাম । কি অপূর্ব স্বাদ, গোবিন্দভোগ চালের গন্ধ, পুজোর আমেজ। মন চলে গেলো বেশ কিছু বছর আগের এক ঘটনায় ।
না ছিল পুজো,না ছিল ভোগ, না ছিল গোবিন্দভোগ চাল   .......

Kobe   (pc :www.jnto.go.jp)


১৯৯৬। অক্টোবর মাস । এক মাস হলো জাপান এ এসেছি ।
এমনিতেই হোম সিকনেস তুঙ্গে, তারওপর আবার দুর্গাপুজো!
যতবার ক্যালেন্ডারের দিকে তাকাই মনটা খারাপ হয়ে যায়..........

আমাদের International hostel টা  Kobe পোর্ট এর খুব কাছে ছিল । হঠাৎ সেদিন জানা গেলো যে Kobe পোর্টে একটি ভারতীয় জাহাজ এসেছে। এক মহারাস্ট্রিয়ান স্টুডেন্ট এই খবরটা এনে দিলো। সাথে এও  বললো যে ওর এক বন্ধু জাহাজে চাকরি করে এবং জাহাজের ক্যাপ্টেন নাকি বাঙালি, Mr. Roy, জিজ্ঞেস করছিলেন এখানে কোনো বাঙালিকে ও চেনে কিনা।

একে বাঙালি ক্যাপ্টেন , তারওপর Roy, তারওপর দুর্গাপুজো, সেদিন ছিল মহাষ্টমী!
শোনামাত্র হোমসিকনেস ছাপিয়ে উঠলো, মন কেঁদে উঠলো একটু বাংলা বলার জন্য, জেগে উঠলো বিদেশে দেশোয়ালি প্রেম।
যদিও ততদিনে হোস্টেলে দুই বাঙালি দাদা (A-দা , K-দা ) থাকাতে  বাংলা বলার সুযোগের কোনো অভাব ছিলোনা .....তবুও  ......

জাহাজের সমস্ত ডিটেলস নিয়ে আমি আর K -দা পৌঁছে গেলাম পোর্ট এ । কমন বন্ধুর সাথে আলাপ করে পৌঁছে গেলাম জাহাজে। কি বিশাল জাহাজ (নামটা ভুলে গেছি)। আমি জীবনে অত বড় জাহাজে আগে উঠিনি । ক্যাপ্টেন ছিলেন না বলে আমাদের অন্য একজন পুরো জাহাজ ঘুরিয়ে দেখালেন। নিচের ডেকে কত লোকজন, অনেকের সাথে আলাপ ও হলো। ওপরের ডেকে বসে চা খেলাম, অপেক্ষা করতে লাগলাম ক্যাপ্টেনের জন্য! জাহাজের বেশিরভাগ লোকজন দক্ষিণ ভারতীয়, তাই "আজ অষ্টমী" ফিলিংটা  তখনও ঠিক আসছিলো না ।
একটু পরে ক্যাপ্টেন ফিরে এলেন, আমাদের ডাকলেন ওনার কেবিনে । সাথে ওনার স্ত্রী ও  তিন বছরের মেয়ে। এইবার বেশ ভালো লাগলো। বাংলায় কথা বলতে পেরে মন খুশি হলো।

প্রথম দেশের বাইরে গেছি, মহাষ্টমীর দিন এক বাঙালি পরিবারের সাথে সুদূর জাপানে বসে গল্প করার যে কি আনন্দ তা লিখে বোঝানো যাবে না ।ওনারাও বার বার বললেন "আজ অষ্টমী, দেশের বাইরে ভালো লাগে না, ইত্যাদি ইত্যাদি।"
সমব্যথী পেয়ে মন আরো খুশি !

খাওয়া দাওয়া হলো, এবার হোস্টেলে ফেরার পালা।
ক্যাপ্টেন Roy বললেন, "তোমরা স্টুডেন্ট, আজকে পুজোর দিনে, কিছুই দিতে পারছি না তোমাদের। তবে ভালো গোবিন্দভোগ চাল আছে, তোমরা কিছু মনে না করলে আমি দিতে চাই "।

আমার সত্যি স্টুডেন্ট মানুষ । জাপানে এ বসে গোবিন্দভোগ চাল পাবার আনন্দে সঙ্গে সঙ্গে ঘাড়  নাড়িয়ে সম্মতি জানালাম। ক্যাপ্টেন পরিবারকে অসংখ ধন্যবাদ জানিয়ে গোবিন্দভোগ চালের প্যাকেট হাতে নিয়ে খিচুড়ি আর পায়েসের স্বপ্ন দেখতে দেখতে আমি আর K-দা হোস্টেলের দিকে হাঁটা দিলাম!

পোর্ট থেকে বেরিয়ে গোটা ১০মিটার গেছি।.....ব্যাস।...
হটাৎ সাইরেন বাজিয়ে পুলিশের গাড়ি। ঠিক যেন হলিউড সিনেমার সিন্।
আমাদের দুজনকে ঘিরে  তিনটে পুলিশ গাড়ি এসে দাঁড়ালো ।
ব্রেকের আওয়াজ  ...ক্যাঁচ ক্যাঁ.......চ !!!
ভয়ে আমরা স্ট্যাচু !

বন্ধুকধারী দুই পুলিশ গাড়ি থেকে নেমে জাপানিতে  কি যে বললো চিৎকার করে কিছুই বুঝতে পারলাম না। তবে কথার সুর এবং মাত্রা শুনে মনে হলো না ভালো কিছু বলছে। তাকিয়ে থাকলাম ফ্যাল ফ্যাল করে.....তখন একমাস ও হয়নি জাপানে। ভাষাটা একেবারেই বুঝিনা।
ওদের মধ্যে একজন আমাকে হাত তুলে ইশারায় কি যেন বললো। তাও বুঝলাম না।
এক পা নড়তেই একজন পুলিশ এক ছুট্টে একদম আমার কাছে। ততক্ষনে  তো আমার অবস্থা ঘাবড়ে ঘ। খেয়েছে , গ্রেফতার করবে নাকি? কি করলাম? K -দার ও একই অবস্থা ।
কেলেঙ্কারি কান্ড!

আমার ভ্যাবাচ্যাকা মুখ দেখে পুলিশ বাবাজি আরেকটু এগিয়ে এলো......আমি তখন আমতা আমতা করে বললাম, "actually we are  university students, we came to meet a friend..'
উনি কিছু বুললেন না, পাশের গাড়ি থেকে আরেক পুলিশকে ডাকলেন ।তার মনে হয় ইংরিজি সেকেন্ড ল্যাংগুয়েজ ছিল । তার ও হাতে বন্দুক!
সে চালের প্যাকেটটা  দেখিয়ে বললো "what in packet? down down"
[আমি ততক্ষনে ভয়ে চালের প্যাকেট এমন জাপ্টে ধরে আছি যেন প্রাণ গেলেও চাল যেতে দেব না]

নামিয়ে রাখলাম মাটিতে।....খুলে দেখালাম, বললাম,
"Rice, gift from captain, ship , India"
[ততদিনে বুঝে গেছি জাপানে কি করে ভাঙা ভাঙা ইংরিজিতে কথা বলতে হয়]

পুলিশ বাবাজি এমন ছিটকে উঠলো যেন প্যাকেট এ চাল নয় কেউটে সাপ দেখেছে।
বললো "Rice! Rice! no allowed!! port customs!, go back go back"

আমাদের তখন "ছেড়ে দেমা  কেঁদে বাঁচি " অবস্থা। সঙ্গে সঙ্গে চালের প্যাকেট এগিয়ে দিলাম পুলিশের  দিকে।উনি এক পা পিছিয়ে গেলেন। জাপানিতে আবার কি সব বললেন, সুর এবং মাত্রা উঁচু!
পাশের ইংরিজি সেকন্ড ল্যাংগুয়েজ পুলিশ এগিয়ে এসে বললো  "no no, you go you go ..rice back "

"K-দা, মনে হচ্ছে বলছে নিজেদের গিয়ে ফেরত দিতে হবে"......

গুটি গুটি পায়ে ফিরলাম পোর্ট গেটে । কোনোরকমে চালের প্যাকেট পোর্ট এর অফিসে ফেরত দিলাম।অফিসার গেস্ট রেজিস্টারে নাম চেক করে বললেন, "Call Captain Roy? help?"

আমরা তখন কোনো রকমে হোস্টেলে ফিরতে পারলে বাঁচি ! চুলোয় যাক গোবিন্দভোগ চাল।
বরং গোবিন্দকে ডাকছি , হে ভগবান রক্ষে করো, বাঁচাও এই বিপদ থেকে!
"আরিগাতো আরিগাতো " বলতে বলতে একদম about turn !
[একটাই ওয়ার্ড শিখেছিলাম ততদিনে, আরিগাতো , মানে thank you ]

হোস্টেল ফিরে শুনলাম যে কিছু জিনিস পোর্ট এর বাইরে  নিয়ে যাওয়ার অনুমতি থাকেনা । চাল ও সেই লিস্টের একজন । ক্যাপ্টেন Royএর  নিজের হাতের সই করা অনুমতিপত্র থাকলে কোনো অসুবিধে হতো না । হয়তো বা তাড়াহুড়োতে উনি ভুলে গেছিলেন দিতে।
যাগ্গে, অষ্টমীতে খিচুড়ি বা পায়েস কোনোটাই খাওয়া হলো না। পুলিশের হাত থেকে বেঁচে ফিরে আসার খুশি গোবিন্দভোগ চালের খিচুড়ি খাওয়ার থেকে অনেক বেশি !

************************************~~~~~~~********************************

......দিন কাল পাল্টে গেছে । আজকাল সব কিছুই প্রায় পাওয়া যায় দেশের বাইরে । জীবনের চাহিদাগুলোর ও অনেক পরিবর্তন হয়েছে । সচেতনতা ও অনেক বেড়েছে ।
এখন কোনো স্টুডেন্ট অষ্টমীর দিনে এমনি ইমোশনাল হয়ে  পোর্টে গিয়ে গোবিন্দভোগ চাল নিয়ে আসবে বলে মনে হয় না.........
হয়তো Facebook এ স্টেটাস আপডেট দেবে "feeling emotional, missing gobindobhog chal"
;-)










Wednesday 6 September 2017

Chill, chill...just chill.....



[Scene]:  মা দুগ্গা প্যাকিং করছেন মর্তে আসার জন্য ।
ঘরদোর ছত্রাকার । বাবা বিশ্বনাথ এক এক করে সুটকেস নামিয়ে দিচ্ছেন আলমারির মাথা থেকে।


মা: আর তো বেশি দিন নেই মর্তে যাবার।যে যার নিজের সুটকেস প্যাক করে ফেলো, ওখানে গিয়ে এটা পাচ্ছিনা, ওটা পাচ্ছিনা যেন শুনতে না পাই।

বাবা: গিন্নি, যাচ্ছো তো বাপের বাড়ি, একটু chill !

মা: সেই, আমি chill করলে হয়েছে আর কি! তুমি তো বলেই খালাস।তোমার তো chill ই chill । সংসারের সব দায়িত্ব তো আমার  .....

বাবা: আহা মাথা গরম করো কেন গিন্নি। লাল কাঞ্জিভরামটা অবশ্যই নিও সুটকেসে...ওটা পড়লে তোমাকে দারুন লাগে!স্পেশালি আরতির প্রদীপের আলো যখন তোমার মুখে  .....

মা: থাক, বেশি কথা বোলো না। কি তোমার এমন কাজ কৈলাশে যে ৪ দিন ছুটি পাবে না? এমনিতেই তেলের দাম কমে যাওয়াতে সব প্রজেক্ট বন্ধ!

বাবা : আহা, অন্যান্ন প্রজেক্ট তো সব চলছে! দেখছো না সমস্ত জগৎ এখন renewable এনার্জি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে। কোনো দেশ সূর্যের আলো চাইছে তো কোনো দেশ বেশি হাওয়া- এতো সব মাথায় রেখে আমার ছুটি পাওয়া একেবারে অসম্ভব! শুধু আমার না, ইন্দ্র, বরুন, পবন --সবার ছুটি ক্যানসেল হয়ে গেছে ।

মা: কি জানি বাপু, এমন ভাবখানা করো যেন আমার কোনো কাজ-ই নেই। যা ছিল তা তো ছিলই, এখন আবার ডিফেন্স মিনিস্ট্রি ও এসে পড়লো আমার ঘাড়ে। যাগ্গে এই বাপের বাড়ি যাবার মুখে আর এইসব ঝগড়া ভালো লাগে না।
..এই লক্ষী সরস্বতী কার্তিক গণেশ ......কই গেলি সব?

ছেলেমেয়েরা: [সমস্বরে] : যাই মা.......

লক্ষী :  মা আমি কিন্তু এবার আমার ভাঁড় ছাড়া কোথাও যাবো না। একেই গতবারের সব ৫০০ টাকার নোট গুলো জলে গেলো। তুমি ওখানে কিছু কিনতে দিলে না আর ফিরে এসে ব্যাস, demonetisation! আমি আর রিস্ক নেবো না এবার, ওখানে যা প্রণামী পাবো সব খরচা করে ফিরব। শুনছি এবার পুজোর বাজারে লিনেন শাড়ি খুব চলছে!


মা: আহা বাছা, রাগিস কেন? সুন্দর গোলাপি রঙের ২০০০ টাকার নোট বেরিয়েছে তো! 

লক্ষী: কিছু বিশ্বাস নেই, রাতারাতি উধাও হয়ে যেতে পারে!
একমাত্র খুচরো পয়সা সেফ । তবে পয়সা যেন কেমন খোলাম কুচি হয়ে গেছে।কোনো ভ্যালু নেই !আমার ভাঁড় দেখলে লোকজন হাসে! এক বাড়িতে গত বিস্সুতে দক্ষিণার থালায় ঠঙ করে আওয়াজ হওয়াতে পুরুত মশাই না দেখেই রেগে বললেন, 'ওই দক্ষিনা লক্ষীর ভাঁড়ে ঢেলে দাও".....

সরস্বতী: আর আমিও বলে দিলাম, আমি বই খাতা পেন নিয়ে যাবো সঙ্গে। গতবার ভাইদের পাল্লায় পরে ipad নিয়ে চলে গেছিলাম!! কি কেলেঙ্কারি। অর্ধেক প্যান্ডেলে wi-fi নেই । যেখানে আছে সেখানে ভাইরাস এর ছড়াছড়ি! 

মা: আহা বাছা, রাগিস কেন? এই সব যন্ত্র তো মানুষ বানিয়েছে নিজেদের সুবিধের জন্য।

সরস্বতী: সুবিধে? সুবিধে করতে গিয়ে সব হাতের লেখার কি অবস্থা হয়েছে দেখেছো? আর বানানের কথা নাই বা বললাম! tweet করতে শিখে যেন মাথা কিনে নিয়েছে! Could কে cud, the কে d, great কে gr8, এমনকি একটা দেশের প্রেসিডেন্ট হয়ে Covfefe?? কোনো মানে হয়? আমার মাথা গরম হয়ে যায় এইসব দেখলে!

কার্তিক: আমার ও experience তেমন ভালো না। সবার হাতে ওই একটা যন্ত্র হয়েছে। এতো করে বাবরি চুল সেট করে গেলাম! সবাই নিজের selfie তুলতে এমন ব্যস্ত, কেউ তাকিয়ে পর্যন্ত দেখলোনা! উল্টে parlour-এর টাকাটা আমার একেবারে waste! আমি ভাবছি এবার যাবোই না।

মা: আহা বাছা, ধৈর্য ধর।

গণেশ: এবার আমিও রিস্ক নেবো না। সাথে নেবো Himalaya ঘি এর শিশি।এখন মর্তের লোকেরা এতো বেশি ডায়েট নিয়ে ভাবছে যে লাড্ডুগুলোর কোনোই স্বাদ নেই...স্বাদ থাকবে কি করে? না আছে চিনি, না আছে ঘি ! এদিকে কিলো কিলো extra cheese দিয়ে Domino pizza খাচ্ছে! কি বিস্বাদ, আমার ইঁদুর পর্যন্ত মুখে তুললো না! তারওপর হয়েছে কি এক নতুন 'জলাঞ্জলি' ব্র্যান্ড -সে তো ঘি নয়, সে হলো গিয়ে..যাগ্গে।মর্তের লোক ভাবছে ওই ঘি খেলে ওইরকম পেট হবে! আরে বাবা সবাইকে তো তুমি শিল্পা শেঠি বানাও নি !!

মা: এতো মহা মুশকিলে পড়া গেলো! আগে মামাবাড়ি যাবো বলে কি উৎসাহ ছিলো, আজকাল সেই উৎসাহে কেমন জানি একটু ভাটা পড়েছে! সত্যি বলতে কি আমার ও গতবার থেকে মনটা একটু খারাপই।সব কিছু কেমন জানি বদলে যাচ্ছে।
কি যে এক বাবা-কালচার শুরু হয়েছে, গুন্ডা চরিত্রহীন লোকজনদের বাবা-বাবা বলে তোরা মাথায় তুলে নাচ্চিস!কেন? কোন জিনিষটা ওর আছে যা তোদের নেই?বানিয়েছি তো আমিই।নিজেদের ওপর বিশ্বাস না রেখে আরেকজনের প্রতি অন্ধ ভক্তি কিসের? ঐটুকু বুদ্ধি তো আমি দিয়েছি বলে মনে হয় ।
তারপর হয়েছে গুচ্ছের বাংলা সিরিয়াল, না আছে কোনো মাথা না আছে কোনো মুন্ডু। শাশুড়ি আর ননদের বিষে ভরা! ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চাদের দিয়েও কি সাংঘাতিক কুটিল চরিত্রের অভিনয়! আর তাই বসে ঘন্টার ঘন্টার দেখছে মর্তের লোকাল দশভূজারা।এদিকে মুখে women empowerment নিয়ে কথা!
আজকাল আমার থেকে আমার প্যান্ডেলের দাম বেশি।এক গাদা টাকা খরচ করে বানাচ্ছে সাবানের প্যান্ডেল, কিংবা দেশলাইকাঠির কিংবা প্লাস্টিকের গ্লাসের ! ওই প্যান্ডেলে আমার দম বন্ধ লাগে !পুজোর প্যান্ডেলের যা বাজেট, তাতে ছোট্ট একটা স্কুল তৈরী হয়ে যায়! একটু ভেবে দেখ, চার দিনের সাবানের প্যান্ডেল নাকি ৩৬৫ দিনের স্কুল? একটু মাথা খাটা বাছারা  .......
কোনোরকমে নমঃ নমঃ করে পুজো সেরে সবাই বেপাত্তা হয়ে যাস। প্যান্ডেল খালি খাঁ খাঁ করে! কারণ তখন প্যান্ডেলের বাইরে মাইক এ সাংস্কৃতিক প্রোগ্রাম এ বাজছে "বেবিকো base পসন্দ আয়া!" খুব বড় আর্টিস্ট, কোথায় যেন প্রাইজ পাওয়া। কোথায় গেলো সেই পুজো সংখ্যার গান কিংবা সেই সানাইয়ের সুর?পাড়ার ছেলেমেয়েরা কোমর বেঁধে ধুনুচি নাচ ও করে না। হাতে ফোন, সর্বক্ষণ!
অষ্টমীর দিনটা বড়  ভালো লাগতো খিচুড়ি ভোগ আর লাবড়া খেতে। তা সেও নাকি আজকাল আর কারুর ভালো লাগে না--বড্ড সেকেলে, বড্ড  একঘেঁয়ে, বড্ড carbs !
সব থেকে খারাপ লাগে তোদের ঝগড়া দেখে! যখন বানিয়েছিলাম তখন একদম সেম টু সেম বানিয়েছিলাম। দুটো চোখ, দুটো কান, একটা নাক, লাল রক্ত, সোনার হৃদয়! এখন তার ওপর তোরা নিজেরা কত বিভেদ যে বানিয়েছিস। সারাক্ষন কিছু না কিছু নিয়ে ঝগড়া করে চলেছিস।
খুব কষ্ট হয়, প্রাণ কাঁদে !
এমনি চলতে থাকলে আমার ও বাপের বাড়ি যাওয়া নিয়ে হয়তো ভাবতে হবে!

[শাড়ির আঁচলে চোখ মুছে]

Knock Knock !

অসুর: মা ঠাকরুন, আসতে পারি?

মা: হ্যা এসো, তুমিও প্যাকিং করে নিও। আর দয়া করে রাস্তায় behave yourself!

অসুর: নানা কি যে বলেন  মা ঠাকরুন। তবে খুব সত্যি কথা বলতে গেলে, খবরের কাগজ তো আমিও পড়ি !মর্তে গিয়ে হয়তো দেখবেন আমিই সব থেকে well behaved ! শুধু শুধু অসুরকুল বদনাম, মর্তে তো গুরু বা বাবারা অসুর থেকে কোনো অংশে কম নন ।
যাগ্গে, যা বলছিলাম। আমার দুইখান কথা আছে। বয়স হচ্ছে, টানা চারদিন ওই ভাবে ত্রিশূল এ নিচে বেঁকে দাঁড়িয়ে থাকা খুব কষ্টকর। পিঠের spondylitis এর ব্যাথাটা বেড়ে যায়, আর মাঝে মাঝে ওই সিংহের চুলগুলো নাকে ঢুকে হাঁচি পায়। একটু নড়লে আবার হাঁস আর পেচাঁ দুদিক থেকে খোঁচা মারে, ওই যে "কাদায় পড়লে হাতি etc ", আর কি। আজ্ঞে তাই বলছিলাম যদি অনুমতি দেন তবে ওই কলাবৌ-এর পাশে একটু জায়গা খালি থাকে, গিয়ে দুদণ্ড বসতে পারি ।
এছাড়া, এবার খুব ইচ্ছে একটা bellbot pant পড়ার। অনুমতি হলে একটা কিনে আনি। সেদিন Sholay দেখছিলাম, উফফ কি ব্যাপক লাগছিলো ওই মর্তের অমিতাভ বচ্চন কে! জানি  Pink হিট, তেমনি Piku ও হিট, তবে Sholay -র ধারে কাছে আসেনা! আপনারা তো থিম পুজোয় নানা সাজে সাজেন, আমার সেই এক রঙিন সিল্কের খাটো ধুতি বড্ড একঘেঁয়ে হয়ে গেছে! শুনছি পুরোনো স্টাইল আবার ফিরে আসছে, তাই বলছিলাম যদি একটা bellbot  .....আর হ্যাঁ, বলছিলাম যে  ..ইয়ে মানে  ..বলছিলাম আমার ও একটা স্মার্ট ফোন চাই! ডাকিনীর সাথে whatsapp করতে চাই। ....

মা: আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে, বেশি বকবক করো না। রেডি হও। মোষটাকে একটু ভালো করে চান করিও ।
কলা বৌ, ও কলা বৌ, এক কাপ চা খাওয়াও দেখি। পাকিং করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে গেলাম .....
সব তো আমাকেই সামলাতে হবে। ওনার তো আর টিকিটি দেখা যাবে না । সুটকেস নামিয়ে দিয়েই হাপিস ..

[মা দুগ্গা গজ গজ গজ গজ করতে করতে খাটে বসে পড়লেন]





Friday 18 August 2017

সবই অভ্যেস

ফিরলাম দেশ থেকে। কিছু টুকটাক observation, like always . ;-)



wikipedia 
১. কথা 

দেশের বাইরে আছি বেশ কিছু বছর হয়ে গেলো। বয়স ও হচ্ছে । ফলে আজকাল যখন দেশে যাই, কেমন জানি অনেক ক্ষেত্রেই  মনে হয় 'উফ আমরা কতো কথা বলি'। সবই অভ্যেসের ব্যাপার।
আবার পুরোটাই আমার মনের ভুল ও হতে পারে ,আর তারওপর ওই যে বললাম। ..বয়স...একটু খেঁচা টাইপের হয়ে গেছি মনে হয় !
মুড্ ভালো থাকলে অবশ্য কথাগুলো বেশ মজাও লাগে, হিজিবিজির রসদ পেয়ে যাই।

কলকাতায় আরামবাগ বলে একটা grocery স্টোর খুলেছে বেশ কিছুদিন হলো।
বাড়িতে বিস্কুট শেষ, গেছিলাম কিনতে ।
দরজা দিয়ে ঢোকা মাত্রই দাড়োয়ান ব্যাগ জমা করে নিলো, হাতে ধরিয়ে দিলো শপিং বাস্কেট । বাইরের গরম থেকে AC -র ঠান্ডাতে চোখ বুজে এলো।

এক পা এগিয়েছি কিনা হঠাৎ এক মহিলা এসে.....

"স্কিনটা তো দেখছি বেশ খারাপ। তার ওপর অজস্র open  pores গালে এবং চিবুকে"

এক মুহূর্তের জন্য একটু হকচকিয়ে গেলাম । কোনো দূর সম্পর্কের আত্মীয় নয়তো? হয়তো আমি চিনতে পারিনি! ;-)
পরক্ষনেই বুঝলাম উনি কোনো কোম্পানির কিছু প্রোডাক্ট মার্কেটিং করছেন।
এমনি ডাইরেক্ট মার্কেটিং এর অভ্যেস অনেকদিন চলে গেছে। একটু রাগ ও হলো...আরে বাবা আমার স্কিন আমার pores , তাতে আপনার কি?

"আপনি জয়েস এর toner এবং moisturizer টা ব্যবহার করতে পারেন" বলে মহিলা আমার হাতে একটি গোলাপি পদার্থ ধরিয়ে দিলেন। কোনো জিজ্ঞেস আবাদের বালাই নেই।
কেমন জানি একটা ওভার confidence ওনার গলায়, যেন এক মহিলাকে 'খারাপ স্কিন' এর হাত থেকে বাঁচিয়ে উনি ধন্য করেছেন।

আমি গোলাপি পদার্থটি ওনার হাতে ফেরত দিয়ে বললাম, না আসলে আমি কিছু ব্যবহার করিনা। থাঙ্কস ।

"ওইটাই তো ভুল করেন , স্কিন তো খারাপ হবেই"  
(ওরে বাবা এতো আমার বড়  পিসিমার থেকেও কড়া )

আমি এগিয়ে গেলাম।  চোখে মুখে একটু বিরক্তি। একেই স্কিন খারাপ বলেছেন, যতই ওপরে দেখাই যে গায়ে মাখিনি, একটু খারাপ তো লেগেইছে ..

উনিও এগিয়ে এলেন।

"চোখের তলায় এতো কালি, কিছু ভেবেছেন এই নিয়ে?"

মরেছে !! আমার চোখের তলার কালি নিয়ে আমার মাকেও এমনি উৎকণ্ঠা প্রকাশ করতে দেখিনি। চুপ থাকলাম, একটু ভ্যাবাচ্যাকা মুখ করে। আসলে সত্যি এমনি ডাইরেক্ট পার্সোনাল সেলস এর অভ্যেস চলে গেছে বহু বছর , বুঝতে পারিনা ঠিক কি উত্তর দেবো। আবার পুরোপুরি অবজ্ঞা করতে গেলে নিজেকে রুড মনে হয় ।আমাদের পাশ দিয়ে কিন্তু অনেকেই দোকানে প্রবেশ করেছেন ততক্ষনে, তাদের দিকে উনি তাকাচ্ছেন না ! হয়তো ওনাদের স্কিন ঠিক আমার মতন খারাপ নয়!!
আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন যেন উত্তরের অপেক্ষায়। আমি তখন মিনমিন করে বললাম "অনেক কিছু ট্রাই করেছি, কাজ হয়নি", বলেই হাঁটা লাগলাম বিস্কুটের দিকে। ...

"জয়েস এর eye লোশনটা  ট্রাই করুন, এক সপ্তাহের মধ্যে ফল পাবেন, রাতে শুতে যাওয়ার আগে একবার করে লাগাবেন,  জয়েস face wash দিয়ে মুখে ধুয়ে "।

আর নিতে পারলাম না ।
বললাম " আমি জয়েস কেন কোনো প্রোডাক্টই ট্রাই করতে চাইনা, বিস্কুট কিনতে এসেছি, চা খাবো "....

আমার এহেন সৌন্দর্য সম্পর্কে অসচেতনতা দেখে মহিলা একটু বিরক্ত হয়ে চলে গেলেন দরজার কাছে। ...আবার কার স্কিন খারাপ দেখতে!
আসলে ওনার কাজ উনি ঠিক করছিলেন। আমারই এই ধরণের sales এর অভ্যেস চলে গেছে একেবারে। ..সবই অভ্যেস !
;-)

২. আরো কিছু কথা 

বিস্কুট কিনে বাড়ি ফেরার পথে রোলের দোকান। ছেলে তো দেশে গেলে এই দোকানের এগ রোলের ডেলি কাস্টোমার হয়ে যায়। যথারীতি গিয়ে দাঁড়ালাম কাউন্টার এ । ভদ্রলোক হেসে বললেন
"দুটো এগ রোল, একটা লঙ্কা ছাড়া তো? একটু অপেক্ষা করতে হবে"
আমার আগেই ছেলে ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানালো। অর্থাৎ এহেন অমৃত খাওয়ার জন্য সে অপেক্ষা করতে রাজি!
ঝিরঝির করে বৃষ্টি পড়ছিলো, আমরা রাস্তার এক সাইডে অপেক্ষা করতে লাগলাম।

পাশে, ঠিক দোকানের বাইরে সবেধন একটিমাত্র প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে একটা মহিলা ফিশ কাটলেট খাচ্ছেন, সাথে কাসুন্দি । এক ভদ্রলোক মহিলার মাথায় ছাতা ধরে দাঁড়িয়ে আছেন, নিজে কিছু খাচ্ছেন না। দৃশ্যটি যারপরনাই রোমান্টিক, মহিলা ভাগ্যবতী তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কি জানি হয়তো বা ভদ্রলোকের cholesterol আছে, মহিলার হয়তো Sugar ! তাই হয়তো রোলের দোকানে কর্তা ছাতা ধরেন আবার মিষ্টির দোকানে গিন্নি! এইসব ভাবছিলাম ওনাদের দিকে তাকিয়ে। ...

হটাৎ ভদ্রলোক আমার ছেলের দিকে তাকিয়ে বললেন,
" ওবাবা, এ যে দেখি সিনেমা থেকে নেমে আসা সাক্ষাৎ গোগোল !!"

আমার বারো বছরের ছেলের গোগোলের সাথে ঠিক পরিচয় নেই । বাংলা ভালোই বলে, তবে মুখ দেখে বুঝলাম  ভদ্রলোকের কমেন্ট একটুও বোধগম্য হয়নি।
ভুরু কুঁচকে আমার দিকে তাকালো । প্রথমে ওনার দিকে তারপর আমার দিকে। আমি এগিয়ে এসে কিছু বোঝাবার জন্য মুখ খোলার আগেই  ....
উনি বললেন " ওমা তুমি গোগোলকে চেনো না?"

ছেলে মাথা নাড়িয়ে না বললো । আবার আমার দিকে তাকিয়ে ভ্রুকুটি!
আমি আবার মুখ খোলার আগেই  ........
"ও তো দারুন গোয়েন্দা! তুমি জানো  না? সে কি কথা?"

 ছেলে আবার মাথা নাড়িয়ে না জানালো । মনে হয়না 'গোয়েন্দা ' শব্দটাও ওর চেনা!
;-) গোগোল, গোয়েন্দা,  ......সব শব্দই ওর সিলেবাসের বাইরে!

"তা তুমি কোথায় থাকো?"

ছেলে : "আমি এখানের থেকে না ..আমি হল্যান্ড থেকে এসেছি ।

ভদ্রলোক মিষ্টি হেসে গিন্নিকে বললেন "শুনছো ও এখানের থেকে না , হল্যান্ড থেকে এসেছে ।
তা এখন কি ছুটি? এখানে কার বাড়ি এসেছো ? পিসির বাড়ি নাকি মামার বাড়ি?"

(গিন্নির ফোকাস ফিশ কাটলেট এই....)

ছেলে: "ঠাম্মার বাড়ি"

উনি : বাহ্ তাহলে তো দারুন আদর এখন। ...

ছেলে : "হ্যাঁ "
[আবার আমার দিকে তাকালো, একটু ভ্যাবাচ্যাকা মুখ, অচেনা কেউ যে কাউকে এতো প্রশ্ন করতে পারে রোলের দোকানের সামনে, সেটা ওর ধারণার বাইরে ]

কথোপকথন হয়তো বা আরো খানিক চলতো ....

" দিদি, দুইখান এগ রোল রেডি"...আওয়াজ দিলো এগ রোলের দোকানি।

" এই যে শুনছো , আমার খাওয়া শেষ, চলো "  ....আওয়াজ দিলেন গিন্নি ।
ভদ্রলোক আমার ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে তারপর গিন্নির মাথায় ছাতা ধরে হাঁটা দিলেন।

মনে মনে হাসলাম । সত্যি অভ্যেস চলে গেছে এতো কথা শোনার।
এমনি কথোপকথন এখনো কেবল কলকাতাতেই হয় মনে হয়।একটা অন্য ধরণের আন্তরিকতা, নো ডাউট! ..
মজা লাগছিলো । ছেলের অবাক মুখটা দেখে আরো মজা লাগছিলো। রাস্তায় ওকে পুরো ব্যাপারটা যতটা পারলাম বোঝালাম।
সবই অভ্যেস!

................to be contd.







Tuesday 20 June 2017

ঘোর "কোহলির" সন্ধে -২



কেউ চেনে না তাদের যারা গোল মারলো সাত,
বাজিয়ে তালি বললো না কেউ "ইয়ে হুই না বাত" !

খেলছে এরাও নীল জার্সিতে, টিম India নাম,
লক্ষ কোটি ভারতবাসী দিচ্ছি কি তার দাম?

সমস্ত দেশ উন্মাদ হয় ক্রিকেট প্রেমের ঠেলায়,
বাকিরা সব খরচ খাতায়, উদাসীন অবহেলায় !

তাই বুঝি আজ ক্রিকেট হেরে ভারত মানায় শোক,
জিতলো হকি বোম তুবড়ি ফাটালো নাতো লোক!

ঘোর "কোহলির" সন্ধে যখন আসলো মাঠে নেমে,
মানপ্রীতের দৌড় কিন্তু যায়নি তখনও থেমে !

ক্রিকেট মাঠের বজ্রপাতে চারিদিকে ঘ্যানঘ্যান ,
হটাৎ দেখি ফেসবুকেতে  গজালো হকির ফ্যান !

হার জিত তো লেগেই থাকে, এ কথা সবার জানা,
TV ভেঙে প্রতিবাদ কিসের ,কেন এ উন্মাদনা ?

জিতলে তাদের মাথায় চড়াই, হারলে জুতোর মালা,
অন্য কেউ জিতলে পরে কিসের গাত্রজ্বালা?

খেলছে ভালো যেই দল, গাও তার গুণগীতি,
খেলার মাঠে কেবল খেলো, কোরোনা রাজনীতি !!

লক্ষ্য কোটি ফ্যান, আমাদের উৎসাহ দেওয়া কাজ,
কোনোদিন বা জিতবে কোহলি,কোনোদিন সরফরাজ !

লক্ষ কোটি মানুষ কেবল ক্রিকেট ভালো না বেসে,
ভাবো অন্যখেলায় স্বর্ণপদক আনবে কি করে দেশে!

দুইখান প্রশ্ন আছে:

১. পারিনা কেন উদার হাতে দিতে বিজয়ীকে পুরস্কার?
     হার থেকে কিছু না শিখলে সেটাই আসল হার !!

২. পারিনা কেন হকিকে দিতে জাতীয় খেলার সম্মান?
     দেশের মাথা গর্বে উঁচু , চেষ্টা তাদের আপ্রাণ !!



ps : ঘোর "কোহলির" সন্ধে - ১ লিখেছিলাম গত বছর.....
title credits : Jaideep Mukherjee 

Thursday 15 June 2017

সপ্তম ঋতু : পরীক্ষা-কাল

১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর জানি।.;-)
এই রে ,২ নম্বর প্রশ্নটা  ঠিক বুঝতে পারছিনা। ..
ও মা, ৩  নম্বর  প্রশ্ন তো syllabus এর  বাইরে থেকে!
খেয়েছে! ৪ নম্বরটা তো সকালে চোখ বুলিয়ে আসিনি।...
এবাবা, ৫ নম্বর প্রশ্ন  তো আগের দুবছর এসে গেছে বলে আর পড়িনি।..
ভগবান, ৬ নম্বর প্রশ্নের উত্তর পেটে আসছে মুখে আসছে না। ...

.......কিছুই লিখতে পারছিনা । এদিকে ঘড়ির কাঁটা টকটক করে এগিয়ে চলেছে ।
পরীক্ষক পায়চারি করছেন, বেল বাজলেই খাতা ছিনিয়ে নেবার জন্য ওনার হাত নিশপিশ করছে। এদিকে ওদিক তাকাবার উপায় নেই। উনি কটমট করে দেখছেন ।
সবাই মাথা নিচু করে কি এতো লিখছে? ওরা কি তবে কোয়েশ্চেন কমন পেয়ে গেছে?
আমার হাত ঘামছে। পেনের পেছনটা অনেকটা চিবিয়ে ফেলেছি। কান থেকে গরম হাওয়া বেরোচ্ছে, চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসছে ।
পাস করতে পারবোনা ,পাস করতে পারবোনা .পাস করতে পারবোনা ...

"মা ওঠো, অ্যালার্ম বেজে গেছে , আমার স্কুল এ দেরি হয়ে যাবে"
...ছেলের ডাক এ ঘুম ভাঙলো । ঘুম ভেঙে চারিদিকে তাকিয়ে কি পরম শান্তি।...
নাঃ, আমি পরীক্ষার হলে বসে নেই.....আমি বাড়িতে বিছানায় ঘুমোচ্ছি...আমার একটা ছেলে আছে...তার মানে আমার পরীক্ষা পর্ব মিটে গেছে অনেক দিন আগেই....উফফ কি শান্তি!!
নেহাত দুঃস্বপ্ন!

...এই ধরণের দুঃস্বপ্ন আমি আজ ও দেখি।...
পরীক্ষা, রেজাল্ট বেরোনো, কলেজে এডমিশান। 
আজও ভাবলে গায়ে কাঁটা দেয়, গলা শুকিয়ে আসে, মাথা ঝিম ঝিম করে, হাঁটু টলমল করে , ...
ভয়ঙ্কর সে সব দিন..........সাংঘাতিক সব স্মৃতি ... ..এক কথায় বিভীষিকা !!
আমাকে কোটি কোটি টাকা দিলেও আমি আর ও পথ মাড়াচ্ছিনা !!


PC: careerindia.com

ভালো নম্বর পাবার কি সাংঘাতিক চাপ !
রাত জেগে পড়া, ভোর এ উঠে পড়া. লিখে পড়া, পড়ে পড়া, পায়চারি করে পড়া, লোডশেডিং এ মোমবাতির আলোয় পড়া, .....
শুধু পড়া আর পড়া .....

পরীক্ষার জন্য পড়া!!.

ভারতবর্ষে ৭টি  ঋতু :
 শীত, বসন্ত, গ্রীস্ম,হেমন্ত, বর্ষা, শরৎ এবং পরীক্ষা !

ফেব্রুয়ারী-মার্চ পরীক্ষা কাল। একটা নতুন আবহাওয়া। তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি (units not important), চাপ অতিরিক্ত, চোখে ঘুমের আদ্রতা ১০০%,পরিবারে গাম্ভীর্য ১০০%, ঘন গম্ভীর মেঘের মতন মুখচোখ, কোয়েশ্চন কমন না পেলে বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা, রেজাল্ট খারাপ হলে নিম্নচাপ এবং কালবৈশাখীর আশংকা। যখন তখন দমকা বকা খাওয়ার সম্ভাবনা। সূর্যোদয়/সূর্যাস্ত দেখার সময় নেই....
 ভবিষৎ তৈরির নামে এই ঋতু ছাত্র ছাত্রীদের শৈশবের চরম বলিদান !

সবাই পড়ছে । TV বন্ধ,  রাস্তায় ক্রিকেট বন্ধ, মাঠে ফুটবল বন্ধ, বাড়িতে হাসির আওয়াজ সীমিত! মায়েদের উপোষ বেড়ে গেছে , বাবাদের টেনশান ।
ঠাকুর দেবতারাও প্রচন্ড চিন্তিত। ভক্তরা কেউ অংকে ১০০ চাইছে, কেউ ইতিহাসে পাস মার্ক্স্ ।

"জয় বাবা বিশ্বনাথ , ছেলেটাকে পাস করিয়ে দিও বাবা , খালি পায়ে হেঁটে তোমার মাথায়  জল ঢালতে যাবো, মন্দিরে ১০১ টাকার পেড়া চড়াবো "
বাবা বিশ্বনাথ  পড়েছেন মহা ফাঁপড়ে , এদিকে কাজ হাসিল করে পেড়া খাবার ইচ্ছে , ওদিকে গিন্নি দুগ্গার বকা "পেড়া  খেয়ে খেয়ে সুগারটা যে বাড়ছে!!"

রাত  দিন জেগে পড়া তৈরী। কোথাও গত ১০ বছরের পেপার সল্ভ, কোথাও অভিজ্ঞ টিচারদের বানানো মডেল টেস্ট পেপার। এরপরেও কোয়েশ্চেন 'কমণ না পেলে রাগ হবারই কথা!
পরীক্ষার দিনটি তো যেন যুদ্ধে যাওয়ার প্রস্তুতি!
ঠাকুরকে প্রণাম, গুরুজনদের প্রণাম, খাবার টেবিলে বই খাতা ছড়ানো, তারই মাঝে দু গরস ভাত খেয়ে বেরিয়ে পড়া   ....
ডিম্ খাওয়া বারণ কারণ ডিম  যে গোল ! গোল জিনিস খেয়ে বেরোলে পাচ্ছে শূন্য (গোল) পাও!!!
পরীক্ষার হলের বাইরে শরবৎ আর টিফিন হাতে বাবামাদের ভিড় ।
ঠিক হল এ ঢোকার আগের মুহূর্ত অবধি বই এর পাতায় চোখ আর লাস্ট মিনিট ইন্সট্রাক্সান .......

বার বার চেক করবে কিন্তু!
তাড়াহুড়ো করবে না। ..
Neatly লিখবে।
Break এর সময় লস্সিটা খেয়ে নেবে। .
কোনো প্রশ্ন না পারলে ওটা ছেড়ে পরেরটায় চলে যাবে, সময় নষ্ট করবে না...

ছাত্র ছাত্রীরা কেবল পড়ছে। পরীক্ষায় পাস  করতে হবে, ভালো নম্বর পেতে হবে।
ফোকাস ফোকাস  .....

যেদিন জয়েন্ট এন্ট্রান্স এ চান্স পেলাম না...(মানে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়া কপালে হলো না),,,সেদিন কিন্তু খুব মুষড়ে পড়েছিলাম। মনে হয়েছিল জীবনের এই শেষ। এগোনোর সব রাস্তা বন্ধ । নিজের পায়ে দাঁড়ানোর স্বপ্ন বুঝি স্বপ্নই রয়ে গেলো। একদম খাটিনি, তা নয়। তবে চিরকাল ফাঁকিবাজ ছাত্রী ছিলাম, তাই হয়তো যে পরিশ্রম দরকার তা করিনি ..ফলে চান্স ও পাই নি...fair enough !

পরে অন্যান্ন অনেক দরজা খুলে গেছিলো বলে আজ হয়তো সেইদিনের ক্ষোভ বা দুঃখ আর নেই। "নিজের পায়ে দাঁড়ানো" কথাটার কি মানে সেইটাও বুঝতে সময় লেগেছিলো বইকি। আসলে যেই সময়টা বড় হয়েছি সেই সময় জীবনের একটাই লক্ষ্য ছিল .....ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হওয়া ।ঠিক নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী কিছু ভাবার সুযোগ ছিল না, এতো exposure ও ছিল না, এতো সাবজেক্ট ও ছিল না।
কথায় কথায় Google কাকুও ছিল না সব উত্তর নিয়ে হাতের নাগালের মধ্যে।
হয়তো জীবন অনেক সহজ ছিল । কপালে দই এর ফোঁটা আর পেন্সিল বাক্সতে কাগজে মোড়ানো ঠাকুরের ফুল ছিল চরম শক্তিশালী দুই অস্ত্র ।খাতা জমা দেবার আগে একবার অবশ্যই সেই মোড়ক খাতায় বোলাতাম । বিশ্বাস এমন জিনিস যে মনে হতো ভুল উত্তরগুলো যেন ঠিক হয়ে যাবে। 

বয়সের সাথে সাথে বেড়েছে অভিজ্ঞতা ।
বুঝতে পেরেছি জীবনে আসল পরীক্ষা কোনগুলো! বুঝেছি জীবনের সব পরীক্ষাই মোটামুটি সিলেবাসের বাইরে থেকে প্রশ্নপত্র। মডেল টেস্ট পেপার বলে কিছু নেই। তাই কিছু পরীক্ষায় পাস্ করেছি, কিছুতে ডাহা ফেল করেছি। যিনি প্রশ্নপত্র সেট করেন তিনি নিজের মর্জির মালিক, কোনো moderation এর ধার ধারেন না। রেগে মেগে যে  re -exam এর চাহিদা করবো, তাও শোনেন না ।
পরীক্ষা একবারই হবে!! পাস্ করলে পাস্, ফেল করলে ফেল।

দিনকাল পাল্টেছে ঠিকই। তবে যেটা বদলায়নি সেটা হলো মা বাবাদের চিন্তা।
আজ নিজেরা মা বাবার জায়গায়। নিজেরা পরীক্ষা দেওয়া আর ছেলেমেয়েদের পরীক্ষা,সম্পূর্ণ আলাদা অনুভূতি।
পরীক্ষার সময় ভোরবেলা অ্যালার্ম বাজতো ৪ টের সময়। অন্ধকারে হাঁতড়ে হাঁতড়ে অফ করে দিতাম। ৫ মিনিটের মধ্যে মা এর গলা পাশের ঘর থেকে " কিরে উঠলি ?"
আমিও আজ ছেলেকে ভোরবেলা ঘুম থেকে ওঠালাম, বললাম "French টা আরেকবার revision করে নাও"!
কার পরীক্ষা বোঝা মুশকিল।
মা বাবারা আজও ঠিক সেইভাবে খেটে চলেছে ছেলেমেয়েদের নিজের পায়ে দাঁড় করাবার অভিপ্রায়ে ।

তবে আমাদের আবার আরেক চ্যালেঞ্জ!
নতুন প্রজন্ম আবার মোটামুটি সব জানে।
এদের  ধৈর্য অতি স্বল্প, জানার কৌতূহল আরো সীমিত, হাতে সময় প্রায় নেই বললেই চলে।
বাবা মার থেকে বেশি ভরসা Google এর ওপর।
;-)

 History datesগুলো ইম্পরট্যান্ট , পড়ে  নিও কিন্তু   -- জানি মা, Google করে নিয়েছি ।
নতুন ফুটবল ফিল্ডটা পেট্রল পাম্প মোড় থেকে ডানদিকে  -- জানি মা, Google maps দেখেছি। 
রোজ সবজি ফল খাওয়া উচিত ডাক্তার বলেছে -- জানি  মা, কিন্তু কোন website এ দেখেছো ?
Cycle এর বেলটা কাজ করছে না  --জানি মা , You tube দেখে সারিয়ে নেবো। .

মা  তো , চিন্তা হয় !
তবে এটাও জানি যে এরাও সময় মতন  শিখে  যাবে সব ।
ঠিক যেমন আমরা শিখেছি !

জীবনের পরীক্ষাগুলো  কিন্তু একবারই হবে!! পাস্ করলে পাস্, ফেল করলে ফেল।
Google কাকু কিস্সু করতে পারবে না..........










Wednesday 5 April 2017

দাম্পত্য কলহ : সঠিক উত্তর !!

pc: got this on whatsapp, credit to the artist



হ্যাঁগো শুনছো,
ভাবছি আমি hairstyleটা  করবো এবার বব ,
বিনুনি, খোঁপা,পনিটেল, করে দেখলাম সব !

দারুন আইডিয়া, 
তোমায় গিন্নি লাগবে দেখতে বেশ,
যুগের উপযুক্ত মডার্ন নারী, বাহারি ছোট কেশ !

তবে যে বলো, 
লম্বা চুলে জাগায় মনের আবেগ,
ঠিক যেন কবির মনের আষাঢ়ে  কালো মেঘ !

ঠিক তো বলি, 
কবির মেঘে কেন লাগাবে কাঁচি,
বাহারি অমন খোঁপা দেখে রোজ যে আমি বাঁচি!

বলতে চাইছো,
আমি বইবো সেকেলে বোঝা,
ফ্যাশানহীন পাখির বাসা রোজ বাঁধা কি সোজা?

আরে নানা, 
আধুনিক তুমি, ওগো বধূ সুন্দরী,
ছোট চুলেও, কবির মনের তুমি ডানাকাটা পরী!

কিন্তু, 
যেমন আমার মুখে গড়ন, খায় না যদি খাপ,
যদি লাগে বিচ্ছিরি, সে তো আরেক অভিশাপ!

তাও বটে, 
থাক না তবে লম্বা  বিনুনি ঝুলে,
আমি না হয় আগের মতন সাজিয়ে দেব ফুলে !

ধ্যাৎ, 
লম্বা চুলে অনেক হ্যাপা, হতে চায় না ড্ৰাই,
ছোট চুলে ফুরফুরে মন, ট্রাই করতে চাই  !

ঠিক বলেছো,
কেটেই ফেলো, কিই বা হবে ক্ষতি?
গজিয়ে তো যাবেই আবার যদি বদলায় মতি !

বলছো? 
তবে কি হবে ওই বাহারি ক্লিপ আর ফিতে?
মিষ্টি হেসে নিয়েছিলে আমার হৃদয় জিতে?

গিন্নি, 
সে তো আজ থেকে অনেক বছর আগে,
এখন কি আর ক্লিপ ফিতেতে পুরাতন প্রেম জাগে?

সব্বনাশ, কোন পেত্নী চেপেছে তোমার ঘাড়ে,
এই বয়সে প্রেম করছো কার সাথে চুপিসাড়ে!!
তাই তো ভাবি কিসের এতো অফিস যাবার তাড়া,
বেরোও না আর বাড়ি থেকে পকেটে চিরুনি ছাড়া !
আমার চুলে বব বিনুনি, কীই বা এসে যায়,
কুড়ি বছর বাদে বললে প্রেম 'পুরাতন', হায় !

দুর দূর কি যে বলো তুমিই আমার  প্রিয়ে, 
সুখ দুঃখ লাভ লোকসান সবই তোমায় নিয়ে। 
বড় চুলে তুমি মাধুরী, তুমিই মালিনী হেমা 
[কি বলতে কি বলেছি , এবার ছেড়ে দে মা]!
ছোট চুলেও তুমি সুন্দর, তুমি Katrina কাইফ,
বব বিনুনি,যাই বাঁধোনা, তুমিই আমার লাইফ !!

[গিন্নি গদগদ]
ইশ শ   ......
আসল কথা বাদ দিয়ে বললে বাকি সব,
বললে না তো চুলটা আমি করবো কিনা বব !!!
💓

উফফ জোর বেঁচে গেছি।......কি কঠিন প্রশ্ন।....কোনো সঠিক উত্তর নেই.......
ইতি কর্তা 

[ps : পরের প্রশ্ন লিভিং রুমের পর্দার রঙ কি করা যায়। ...ভেবেই ভয় লাগছে।..কোনো সঠিক উত্তর নেই....]

Wednesday 1 February 2017

সত্য সেলুকাস কি বিচিত্র এই দেশ

সত্য ঘটনার ওপর আধারিত:

http://www.newindianexpress.com/nation/2017/jan/11/rams-name-in-rainbow-replaced-in-bengals-textbooks-1558602.html

pc: discoverykids.com

আকাশ যখন পড়ছে ভেঙে, বৃষ্টি মুষলধারে,
গাছগাছালি ভিজছে যখন চুপটি নদীর পারে,
সূয্যি যখন খুঁজছে কেবল মেঘের মাঝে ফাঁক,
কিচিমিচিয়ে বাসায় যখন ফিরছে পাখির ঝাঁক,

আমি তখন গুলছি বসে প্যালেটে রঙের মেলা  .....

শীতল হাওয়া মুচকি হেসে উড়িয়ে আঁচলখানি,
ইশারা করে দুষ্টু মুখে দেয় সুয্যিকে হাতছানি ,
কালো মেঘ ভীষণ রাগি, গমগমে হুঙ্কার,
সূয্যি মামা ফাঁকটি পেয়ে, রশ্মি ঝড়ায় তার,

আমি তখন একোন ওকোন ভাসাই রঙের ভেলা ...........

আমায় দেখে মুগ্ধ হয়ে কবি বাঁধেন গান,
পেখম মেলে ময়ূর তখন নেচে ভরায় প্রাণ,
প্রেমিক দেখি উদাস হয়ে আমার দিকে চায়,
আমার সাতটি রঙের ভেতর প্রিয়কে খুঁজে পায়,

আমি তখন শুরু করি লুকোচুরি খেলা ..........

বেশ তো ছিলাম সবার মনে রামধনুটি হয়ে,
বৃষ্টি শেষে হাজির হোতাম খুশির বার্তা বয়ে,
আকার আমার রামের ধনুক, রূপকথার রেশ,
রঙিন যেন সিতার আঁচল ভাবতে ভালো বেশ !
তোমরা মানুষ জটিল বড়, এমন কুটিল মন,
প্রকৃতিতেও দিছো ভরে  ধর্মের বিভাজন!
আমার স্রষ্টা একই, যিনি দিলেন রঙ আর আলো,
তোমরা তাতে ঘৃণা ঘেঁটে করছো কেন কালো?
দিলে আমার নাম বদলে, রোমাঞ্চে জল ঢেলে,
রামধনু কে রঙধনু করে কয়খানা ভোট পেলে?

থাক না কিছু জিনিস আজও, যেমন ছিল আগে,
নাইবা ছুঁলে তাদের, যাতে কেবলই প্রেম জাগে!