Friday 25 November 2016

হুঁশিয়ার ......নেহাতই রূপকথা


রাজা বসেছেন সিংহাসনে,
সাথে মন্ত্রী সেনাপতি,
ফয়সালা আজ করতে হবে  
হচ্ছে লাভ না ক্ষতি!
কোষাগারে সোনার মোহর  
কে করছে ভ্যানিশ ,
হাতে নাতে ধরলে তাকে 
রাজ্য থেকে banish !
রেগে রাজা দিলেন হুকুম 
ধরবো আমি চোর,
মোহর ফিরবে রাজকোষে আজ,
রাত হবে না ভোর!

শুনে কাঁপে উজির বেটা 
মাথায় পরে বাজ, 
ঘাম ছুটে যায় ভেবে ভেবে 
শেষ হলো রাম রাজ্ !
সিন্দুকে তার মোহর ভরা,
মাটির নিচে পোঁতা,
এমনি ভাবে পড়লে ধরা 
নাক যে হবে ভোঁতা!

দুয়োরানি হিংসুটি খুব  
সব কাজে দেয় বাধা,
ভীষণ বকেন রক্ষী ডেকে 
খবর পাসনি গাধা?
গলার জোরে তবুও আমি 
করবো কুপোকাত,
মা সারদা সাথে আছেন,
ঠিক জুটবে ভাত!

রাজপুরোহিত নামের জোরে 
নাড়িয়ে বড় টিকি,
বছর বছর জমিয়েছে ধন 
খরচ হয়নি  সিকি!
নামখানা তার রুপোর চামচ 
আজ ঝুলেছে শূলে,
পান থেকে চুন খসলে পরে 
মা দেয়  কান মুলে! 

দুয়োরানি উজির মিলে 
গড়লো  নতুন দল,
রাজপুরোহিত হাতে দিলেন
মন্ত্র ভরা ফল !
সকালবেলা উপোষ করে,
এক কামড়ে শেষ, 
রাজা মরবে ছটফটিয়ে 
বন্ধ মোহর-কেস !
জল্লাদ বেটা ঘাপটি মেরে 
শুনছিলো সব কথা,
'আমিও প্রজা' এই না বলে 
ঠুকলো ওদের মাথা!

বললো ,

"প্রজাদের আজ হয়রানি খুব,  
তবুও আশার আলো ,
কিছু না কিছু বদলাবে ঠিক 
আসছে যে দিন ভালো !
আর যাই হোক রাজ্য জুড়ে 
সাজ সাজ এক রব,
কি জানি এক কিসের আশায় 
এক হয়েছে সব !
প্রজার শোকে প্রজাই কাতর 
এই তো দেখতে চাই,
হাতেহাত ধরে একে অপরের 
সম্বল হও  ভাই !!
আজকের রাজা, কাল থাকবেনা 
থাকব তুমি আমি,
ভেদাভেদ ভুলে শুধু ভালোবাসো 
জীবন একটাই দামি !"












Wednesday 9 November 2016

নামো-র 'ট্রাম্প" কার্ড

                    যেদিকে তাকাই, পূর্ব পশ্চিম, বাজার আজকে hot !
                    কালো থেকে সাদা, হলো দুজনাই, রাতারাতি ঝটপট !

                    পূর্বে  টাকা হচ্ছে উধাও, পাঁচশো এবং হাজার,
                    এমন ছক্কা মেরেছে নেতা, ডুবলো কালো বাজার !
                    রাঘব বোয়াল দুই একখান যদি পড়ে জালে ধরা,
                    সার্থক তবে চুনোপুঁটিদের এই ঝামেলায় পড়া !
                    মানিব্যাগের একশো টাকা, পাঁচশোকে মারে খোঁচা 
                  "রাতারাতি তুই ঠোঙা হয়ে গেলি, উঁচু নাক হলো বোঁচা!"
                    গিন্নি বলেন "শাড়ির ভাঁজে আরো দুটো নোট পেলাম"
                    কর্তা হাসেন মিটিমিটি, মনে মনে নেতাকে সেলাম।



                    পশ্চিমে নেতা জিতলো এমন, জনতা হতবাক,
                    লজিক কিছু বোঝার আগেই লাগিয়ে দিলো তাক !
                    মাথা চুলকে অনেক কথা বলেছিলো গুণী লোকে,
                    ফেসবুকে আজ দেখছি তাদের ডুবেছে অপার শোকে !
                    কেউ বলেছিলো "অসম্ভব বোকা, খুঁজে পাবে না তল"
                    নেতা বোকা নন, বরং বোঝেন, কি চায় বোকার দল! 
                    বদলেছে দিন, বদলেছে লোক, বদলাতে হবে নেতা,
                    কি করবেন, কাল থেকে তিনি, জানে বল ভাই কে তা ?
                    
                    সময় বলবে কেবা ঠিক আজ, কেবা আজ করে ভুল,
                    চুনোপুঁটি আমি ফিরে যাই কাজে, বেকার ছিঁড়ছি চুল!
                    পূর্ব পশ্চিম মিলবে যখন, আরো হবে কত মজা,
                    নেতা সেই, যে ওড়াবে আকাশে,মানবিকতার ধ্বজা !



pc: www.india.com;bbc.com











Friday 4 November 2016

এরা বড়ই আপন



ফোনে:
"হ্যাঁগো , পটল কি জানতে পেরে গেছে ওর বাবার কথা?"
"ও তো আগের দিনই জেনে গেছিলো তবে অন্যরা জানে না যে ও জানে "
" আহারে ,অসহ্য লাগে ওই মহিলাকে, কি কষ্ট দেয় পটলটাকে "

বাস -এ :
"এতো খারাপ লাগছে মেঘ্লার জন্য"
"সেই, কোনোই দোষ নেই মেয়েটার, শুধু শুধু এতো কষ্ট ভোগ করছে।....."
"সবই কপাল, কেউ কি জানতো এমনি হবে?"

আড্ডায়:
"কনকের কিন্তু এবার মুখ খোলা উচিত"
"সেই তো, যত বেশি সহ্য করবে তত বেশি মাথায় চড়বে ওরা "

বিয়েবাড়িতে:
"আমি আগেই বুঝতে পেরেছিলাম  গলার হারটা ওর ননদ চুরি করেছে!"
"কি করে বুঝলে?"
"গোয়েন্দা গিন্নি কেমন ধরলো দেখলে না ?"

মুদির দোকানে:
"উফফ ভুতুটা যা দুষ্ট হয়েছে না!"
"তাই? কেন গো? কি করেছে কাল? আমার কাল দেখাই হয়নি "
"ওই যে দাদুর কানে সুড়সুড়ি দিয়ে দিয়ে পালালো। এমা, তুমি মিস করে গেলে, দারুন ছিলো"

আলোচনার গাম্ভীর্য এবং আন্তরিকতা দেখে এক মুহূর্তের জন্য মনে হবে এরা  আমাদের আত্মীয় বা চেনা কেউ । প্রথম প্রথম একটু চোখ কান খুলে চেনার চেষ্টা ও করতাম। অনেকদিন দেশ ছাড়া তো, কি জানি হয়তো ভুলে গেছি ।....
পটল কি পাশের বাড়ির ঝাঁকড়া চুলওয়ালা ছেলেটা?
কনক কি আমার মামাতো বোনের মেয়ের নাম?
মেঘলা কি আমার শ্বশুরবাড়ির দিকের কেউ ?
ভুতু কি মেজপিসিমার ছোট নাতি?
এই রে.......কার আবার হার চুরি হলো?

পরে বুঝলাম যে এরা আসলে সবার চেনা!  এরা বাংলা সিরিয়ালের চরিত্র । সোম থেকে শনি -দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গী ।বছরের পর বছর এই সিরিয়ালগুলো চলতে চলতে এমন অবস্থা যে পটল, কনক, মেঘলা, ভুতু এখন পরিবারের সদস্য।ওদের সুখ দুঃখ এখন যে কোনো আলোচনার অঙ্গ।ট্রামে, বাসে, বিয়েবাড়িতে, পৈতেবাড়িতে, ফোনে  ...........
নিজেরা দেখিনা বলে হয়তো ঠিক বুঝতে পারিনা । তবে এবার ঘটনাচক্রে দু একখানা চোখে পড়েই গেলো ।
একটা হিজিবিজি রিভিউ দরকার!
[পরের ইন্ডিয়া ট্রিপ এ বাপেরবাড়ি -শশুরবাড়ি। ..কোথাও ঢুকতে দেবে না আমাকে]
;-)

গল্প:  এক দুটো পর্ব দেখেই বুঝলাম সব কটার গল্পের বিষয়বস্তু বড়ই বাজে । সাংসারিক যত প্যাঁচ সম্ভব, সব উজাড় করে গল্পে ঢেলে দিয়েছেন লেখক! কারণ যত প্যাঁচ তত পপুলারিটি ।শাশুড়ি বৌমা খিচখিচ তো আছেই, সাথে ননদের কুটিলতা, বড় জায়ের হিংসে, খুড়শাশুড়ির ছল, মামার অত্যাচার, মাসির বেইমানি, বন্ধুর বিশ্বাসঘাতকতা। .....কিছু বাদ নেই! সব কিছু ঘেঁটে যা ঘ্যাঁট পরিবেশন করছেন, জনতা তাই খাচ্ছে।একটাও কন্সট্রাক্টিভ চিন্তা নেই!
এমনি একটি সিরিয়ালে একটি বাচ্ছা মেয়ের অভিনয় দেখলাম ! মেয়েটি খুবই ছোট, বছর ছয়েক বয়স । কিন্তু সিরিয়ালে সে ভিলেন । প্রচন্ড কুচুটে এবং অত্যন্ত নেগেটিভ ক্যারেক্টার । একদম অবাস্তব!!
ভুরু কুঁচকে, মুখে বেঁকিয়ে সে কখনো বা সরল সোজা হিরোকে কষ্ট দিচ্ছে, কখনো বা চোখ পাকিয়ে অত্যন্ত ঘৃণার দৃষ্টি নিয়ে তার বাবার দিকে তাকাচ্ছে, কিংবা ভীষণ অভদ্র ভাবে মায়ের সাথে কথা বলছে! এতই সুন্দর অভিনয় যে দর্শকদের বাহবার শেষ নেই।আমি ভাবছিলাম মেয়েটিকে এই চরিত্র অভিনয় করাতে গেলে সিচুয়েশান বোঝাতেই হবে । ডাইরেক্টার কি করে একটি ছয় বছরের শিশুকে  এই কুটিল এবং জটিল ব্যাপারটা বোঝাচ্ছেন? সে চোখে মুখে এই ঘৃণা ফুটিয়ে তুলছে কি করে? কিসের বীজ বুনছি  আমরা এই ৬ বছরের শিশুটির মাথায়? এটা  কি অভিনয় এর দক্ষতা? নাকি কুচুটেপনার শিক্ষা? বয়স যখন পুতুল খেলার তখন শেখাচ্ছি শাশুড়ি-ননদের কুটিলতা?
ছোট্ট মেয়েটির জন্য কষ্ট লাগছিলো।ভূত পেত্নী -র মেয়ে ছাড়া এমনি চরিত্র নর্মালি অসম্ভব , অবাস্তব, অতিরঞ্জন!

সাজগোজ : অনেকসময় গল্প খারাপ হলেও নায়ক নায়িকা, তাদের সাজ পোশাক, এইসব দেখে সময় কেটে যায়। এক্ষেত্রে সে গুড়েও বালি । মহিলাগুলোর এমন সাজ যে মনে হয় সাক্ষাৎ মা কালির পাশে দাঁড়ানো ডাকিনি যোগিনী। কপালে এমন বড় টিপ্ যেন একটা গোটা থালা কপালে । যার টিপ্ যত বড় সে তত কুটিল! কাজলের রেখা দুই নয়ন ছেড়ে মাইল খানেক ওপর এবং নিচ অবধি টানা। বিভিন্ন রঙের চুল ঠাকুরমার ঝুলির যে কোনো ডাইনি বুড়িকে লজ্জায় ফেলে দেবে।কানে ওগুলো দুল নাকি ঝাড়লণ্ঠন বোঝা মুশকিল । অথচ মধ্যবিত্ত পরিবারের উনি নাকি বড়বৌ!! বড়বৌ না শাঁকচুন্নি!!

মিউজিক : প্রত্যেকটা কথার মাঝে যে পরিমান ব্যাক গ্রাউন্ড মিউজিক দেওয়া হয়....মাথা কান ঝালাপালা করে। ভালো কথা বললে ঝ্যাং! খারাপ কথা বললে ঝ্যাং ঝ্যাং! কোনো কথা না বললে ঝ্যাং ঝ্যাং ঝ্যাং! ক্যামেরা ও অদ্ভুত।ডিরেক্টরের নির্দেশ অনুযায়ী সেই ঝ্যাং ঝ্যাং এর সাথে একই চেহারার ওপর ততবার ফোকাস। চরম নাটকীয়তা। নায়ক নায়িকার থেকে ক্যামেরা আর মিউজিকের বেশি অভিনয়!অসহ্য!

নায়িকা: আরে নানা, সিরিয়ালে ভালো মানুষ ও আছে।নায়িকা এতই ভালো যেন একেবারে নিপাট গরুটা! মানে ভালো আর বোকার মধ্যে কোনো বিভেদ নেই।চারিপাশের কুটিল প্লট, কিছুই বুঝতে পারেনা। ঘরের কোনে কাঁদে (হ্যাঁ ব্যাক গ্রাউন্ড এ বেহালা বাদক তখন life time achievement award এর কথা ভেবে বাজাচ্ছেন করুণ সুর), তবু মুখ খুলবে না, এমন ভালো।জনতা তাতেও খুশি ।শাড়ির আঁচলে একটু চোখ মুছেও আনন্দ!

সব থেকে মজার ব্যাপার সিরিয়ালগুলোর গল্প সপ্তাহে দুই মিলিমিটার এগোয়। শুরু হয় মিনিট পাঁচেক "গতকাল দেখেছেন" দিয়ে। শেষ হয়  পাঁচ মিনিট "আগামীকাল  দেখবেন" দিয়ে । তারপর আছে পাঁচ মিনিট চবনপ্রাশ, ম্যাগি কিংবা সার্ফ এর বিজ্ঞাপন । তারপর যেটুকু সময় থাকলো তাতে গুচ্ছ গুচ্ছ নাম..closing credits -কস্টিউম থেকে কুচুটেপনা। বাকি গল্পের জন্য বাকি রইলো মিনিট পাঁচেক। তার থেকে ক্যামেরার  ঝ্যাং ঝ্যাং এ আরো মিনিট তিন গেলো। পরে রইলো দুই....তাতে গল্পের নায়িকা (পঁচিশ মণ সোনার গয়না পড়া) নায়ককে একটা প্রণাম করে বললো "আমি তোমার আপন" । 
ঝ্যাং!
ঝ্যাং !
ঝ্যাং!
গল্প শেষ, আবার আসছে কাল।


প্রশ্ন হলো এই সিরিয়ালগুলো এতো জনপ্রিয় কেন?
কেন? কেন? কেন?
উত্তর দাও.....উত্তর দাও......উত্তর দাও....(বাবা তারকনাথ সিনেমার স্টাইলে)









Tuesday 16 August 2016

আমাদের প্রদুনোভা

www.thehindu.com













প্রদুনোভা শব্দটার মধ্যে একটা বেশ ভাব আছে। কেমন জানি একটা গর্ব, একটা আভা, একটা আলো...বাংলা অভিধানের শব্দ না হয়েও কেমন জানি একটা "মানে" আছে!

লক্ষ কোটি মানুষ, চোখের পলক স্থির,
দাঁড়িয়ে তুমি প্রতিনিধি, তোমার লক্ষ্য দৃঢ়।

ডাকলো তোমার নাম, সাথে যেন আমাদেরও,
দেশকে দিলে পাইয়ে তুমি, সম্মান অতুলনীয়!

তোমার পদক্ষেপে, দেখি দেশের অগ্রগতি,
তোমার ভবিষ্যতে খুঁজি,আমাদের উন্নতি!

অলিম্পিকের মশালসম, আশার আলো মনে,
দীপ জ্বালালে দিপা তুমি, দেশের কোনে কোনে! 

আজ লক্ষ কোটি মানুষ,তোমায় সেলাম করে,
গড়তে পারি দীপা যেন, দেশের ঘরে ঘরে!

বিশ্বমাঝে তুমি আমাদের, প্রদুনোভা হোলে,
সমস্ত দেশ মেডেল হয়ে, তোমার গলায় ঝোলে !


Wiki :The Produnova is an artistic gymnastics vault consisting of a front handspring onto the vaulting horse and two front somersaults off. The vault currently has a 8.0 D-score, and is considered the hardest vault performed in women's artistic gymnastics. It is named after Yelena Produnova of Russia, who was the first person to complete it successfully in 1999.

Wednesday 30 March 2016

ঘোর "কোহলি" -র সন্ধ্যা -১













ক্রিকেট পাগল জনতা দেখো উল্লাসে আত্মহারা
জিতেছে ভারত, আনন্দে তাই উঠলো মেতে পাড়া !

পিটিয়ে ছাতু করলো কেমন কোহলি এবং ধোনি
এরা দেশের রত্ন ওগো, মোদের চোখের মনি!!

কর্তা নাচেন, গিন্নি নাচেন, কোহলি প্রেমে পাগল 
আজ ডিনারে থাকবে প্লেটে কষা নধর ছাগল!

ক্রিকেট পুজো সবার সেরা, ভোলায় ব্যথা সকল,
Intolerance মিছিল-টিছিল বড্ড গেছে ধকল !

জমিয়ে এখন বসবে সবাই TV -র সেটটা খুলে।
কানহাইয়ার বক্তৃতা সব গেলেই বুঝি ভুলে?

"যাট" ভাইরা হই হই করে করছে কোটার দাবি,
ক্রিকেট বলে ব্রেক নিয়েছে, তাই তো বসে ভাবি!

পার্লামেন্টও  ঝিমিয়ে কেমন কেউ দেয় না গালি,
সবাই যেন খুশ্ মেজাজে, কেউ ছোঁড়ে না কালি !

মাল্য সাহেব উধাও হলেন হজম কোটি কোটি,
Kingও গেল, Fishও গেল, জুটবে না আর রোটি !

জ্বলছে দেখো দুনিয়া পুরো ব্রাসেলস কিম্বা লাহোর, 
কে মরছে, কে মারছে, যায়না করা ঠাহর!

এরই মাঝে কোহলি যখন কষিয়ে মারে ছয়,
সব ভুলে মন নেচে ওঠে, জয় ক্রিকেটের জয়!

ক্রিকেট ফিভার চললে পরে শান্তি থাকে দেশে,
দেশের সবাই "এক" হয়ে যায়  ক্রিকেট ভালোবেসে!



Title: Joydeep Mukherjee




Monday 7 March 2016

Happy শিবরাত্রি! Happy Valentines Day! Double Trouble!

photo credits  :pinterest 


বাবা:   প্রিয় ভক্তবৃন্দ, Happy শিবরাত্রি! আজকাল সব কিছুতেই দেখছি 'হ্যাপি' লাগিয়ে সবাই wish করে । মন্দ লাগে না। কেমন যেন জন্মদিন জন্মদিন ভাব একটা। ফেসবুক এ আলোড়ন । আমার মাথায় জল-দুধ ঢালতে ঢালতে তোলা অজস্র selfie এবং তাতে অজস্র like! 
এবার আবার Double Trouble !পাঁজি তিথি অনুযায়ী আবার Valentines Day-র লগ্ন ও  লেগে যাচ্ছে !
খুব চাপ । 
একটু stressed ফিল করছি!
কালকেই তো এক ভক্ত চোখ বুজে প্রণাম করে বলছিলো, 
"বাবা সারাদিন উপোষ করে শিবরাত্রি পালন করবো, বিকেলে কিন্তু ভালো একটা Valentine চাই!" বোঝো ঠেলা! বলি আমাদেরও তো তথাস্তু বলার কিছু limitations আছে !...

তবে এবার আমার একটা অনুরোধ আছে । আমার মাথায় তোরা দুধ ঢালা বন্ধ কর । শুধু জল ঢাল, আপত্তি নেই। এই গরমে দুবারের জায়গায় দশ বার স্নান করতে মন্দ লাগে না। তবে দুধটা বন্ধ করলে ভালো হয়।
আহা রাগ করিসনে, বারণ করার কারণ আছে ।


১. আগে অল্প বয়স ছিল..high  fat, low fat, mother diary, milk powder, সব হজম হয়ে যেত। এখন বয়স হচ্ছে, বড় গ্যাস হয়। Soya মিল্কটাই একটু যা সহ্য হয় পেটে।
২. একে জটা বলে গৃহিণীর রেগুলার গজগজ, তাতে দুধ ঢুকে যখন চ্যাটচ্যাট করে, দাম্পত্য কলহ অনিবার্য!। তোদের মায়ের রাগ তো জানিস, পান থেকে চুন খসলেই ত্রিশূল নিয়ে তাড়া করে । পরের দিন চ্যাটচ্যাট এ চুলে শ্যাম্পু করে দিতে গিয়ে বড্ড বকাবকি করে।বিয়ের পরপর এই বকাবকি মিষ্টি লাগতো, আজকাল যেন একটু বেসুরো ঠেকে। 
আর বকাবকি তো জটাতেই থামে না। চলতে থাকে। .
.....কি করে যে সব মেয়েগুলো তোমার মতন বর চায় , তাও আবার উপোষ করে... আমার মাথায় ঢোকে না! যে ঘর করে সেই বোঝে কি জিনিস।..
...ঘরের একটা কাজে হেলপ পাইনা, আর পাবোই বা কি করে? ঘরে থাকলে তো তবে হেল্প। .. 
....কত বলি ওই নন্দীভৃঙ্গী তোমার মাথা খাচ্ছে, তা কে কার কথা শোনে ?
....আর ওই বাঘছাল ফ্যাশন তো অনেক হলো, সময়ের সাথে সাথে একটু বদলাতে হবে তো !! অসুর  পর্যন্ত আজকাল সুন্দর সুন্দর ধুতি পরে!
ইত্যাদি ইত্যাদি ...
৩. তাছাড়া, এইভাবে দুধ ঢাললে "স্বচ্ছ ভারত" হবে কি করে? দুধ, ফল, ফুল,মিষ্টি --  মিলে মিশে একাকার যে....কে পরিষ্কার করবে?
আমার মাথায় ঢেলে নষ্ট না করে বরং নিজেরা খা, অনেক কাজে দেবে। সময় মতন পেটে দুধ ঘি পড়লে পরে ডাক্তার এর বিল দিতে দিতে দেউলিয়া হতে হবে না ।
দুধ ফল না ঢাললেও আমি তোদের ভালোবাসি!
-----বরং আমার মাথায় ঢালার দুধটা একটা গরিব বাচ্ছাকে ডেকে খাওয়া। ওটাই আসল ভক্তি ! সাথে দুটো সন্দেশ ও দিস। 

ওর মিষ্টি হাসিতেই আমার আশীর্ব্বাদ জানবি !

যাই,  Oh!Kailash -এ  আজ dinner-for-two বুক করেছি । 💕
দাম্পত্য কলহ যতই হোক না কেন........😍

তবে হ্যাঁ ,  ওই ডিনারে কলা-সন্দেশ দিয়ে সাবু মাখাটা বন্ধ করিস না -ওইটি আমার বড় প্রিয়। ফিরে এসে খাবো । Valentines day বলে আবার আমার পাতে যেন কেক পেস্ট্রি না দেখি!! তোদের  মা জিগ্গেস করলে বলবি "diet সন্দেশ দিয়ে মেখেছি", নয়তো আবার বকা খাব। সামান্য cholesterol ধরা পড়েছে কিনা!

Happy Shivratri once again !! and Happy Valentine's day!!
;-)


Saturday 5 March 2016

কলম কালি দোয়াত



ছোট্টবেলা থেকে পেন, পেন্সিল, রাবার ইত্যাদি যাবতীয় stationary  আমার খুবই প্রিয়। তবে সব থেকে প্রিয় পেন। সব রকমের -- লাল, নীল ,কালি, ডট  ... সব সব। পকেটে একটু পয়সা এলেই পেন কিনতাম । কেউ কিছু দিতে চাইলেই পেন চাইতাম । বই এর দোকানে গেলে জুলজুল করে তাকিয়ে থাকতাম পেনগুলোর দিকে ।
ওরা যেন হাতছানি দিয়ে ডাকতো । এর জন্য কম বকা খেয়েছি?
কোনো কাকু হয়ত বাবার সাথে দেখা করতে এসেছেন কাজে ।  কাকুর বুক পকেট থেকে  পেনটা উঁকি ঝুঁকি মারত, আমাকে ডাকত। আমি নির্লজ্জর মতন দেখতে চাইতাম পেনটা। হাতে পেয়ে এক টুকরো কাগজ এ একটু লিখে তবে শান্তি পেতাম। বুঝতে পারতাম মা পেছনে চোখ বড় করছে কিন্তু এ এক অদ্ভূত হাতছানি  ...বোঝাতে পারব না ।

ক্লাস ফোরে পেন্সিল ছেড়ে কালি পেন এ লিখতে বলল স্কুল থেকে । মনে পড়ে একটা অদ্ভূত বড় হয়ে যাওয়ার অনুভূতি হয়েছিল। পেন এলো, সাথে এলো কালির দোয়াত। প্রথম দিকে মনে পরে দোয়াতের ঢাকনায়  কালি ঢেলে তারপর খুব সাবধানে পেনে কালি ভরতাম । কিছুদিন পরে বাবা একটা সাদা ড্রপার এনে দিলো ।ওটা দিয়ে কালি ভরা খুব সহজ হয়ে  গেল। টেবিল, টেবিল ক্লথ আর মা  --  সবাই হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো।

আমার অজস্র পেন এর কালেকসন থেকে রোজ নিত্যনতুন পেন বার করে লিখতাম । কখনো কিছু না লেখার থাকলেও পেনগুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করতাম। কোনোটায় কালি ভরতাম, কোনোটায় নিব বদলাতাম, কোনোটা মুছে রাখতাম   ....ভিষণ ভালবাসতাম ।
মনে পড়ে সেই কালি মোছার কাপড়টা? একেবারে মডার্ন আর্ট !
মনে পড়ে ডট পেনের রিফিল খালি হলে কেমন রিফিলের পেছনে জোরে ফু দিলে আরো একটু লেখা যেতো?
মনে পরে দুই হাতের তালুতে রিফিল্টা ঘষে নিলে কেমন আরেকটুখন চলতো রিফিলটা ?
মনে পরে পরীক্ষার আগের দিন সব পেনগুলোতে কালি ভরার কথা? 
মনে পড়ে যখন চার রংওয়ালা  ডট পেন বেড়োলো? একই পেন দিয়ে লাল নীল কালো সবুজ লেখা।
উফ কি excitement !!
.. হাতে iphone  পেয়ে অত excitement হয়েছিল কিনা সন্দেহ ।

তারপর শখ হলো একটা চাইনিস ফাউন্টেন পেনের।তার আবার নিজস্ব্ ড্রপার লাগানো। সে এক দারুন ব্যাপার।কিন্তু পেনগুলোর খুব দাম। ক্লাস নাইন এ মা প্রথম কিনে দিল একটা। কি যে যত্ন তার ! কোথায় যে তাকে রাখব ভেবে পেতাম না...পেন্সিলবক্স এর অন্যান্য 'সাধারণ' পেনগুলোর  সাথে রাখা কি ঠিক হবে? 
পরের ভাইফোঁটাতে আবার লাভ হলো ওই পেন....আহ্লাদে আমি ষোলখানা (আটখানা x ২)!!

যখন বেনারস পড়তে গেলাম, তখন প্রত্যেক মাসের খরচা বাবদ হাতে একটা ফিক্সড টাকা আসত বাবা-মার থেকে। । এর থেকেই মেসের খাওয়াদাওয়া, অল্প বিস্তর বাজার, দুএক খানা সিনেমা দেখা, গঙ্গার ঘাটে মাঝে সাঝে বোটিং, পরীক্ষার আগে বাবা বিশ্বনাথকে পুজো দেওয়া। ..এইসব হতো । আমার আবার তার থেকে অল্প টাকা বাঁচিয়ে দু একখানা পেন কেনার বাতিক ছিল।
হোস্টেলে থাকাকালীন এক life long বন্ধু হলো "সু"। সে আমার পেনের প্রতি এই মোহ দেখে নিজের মাসকাবারি টাকা থেকে প্রত্যেক মাসের এক তারিখে একটা করে পেন কিনে দিতে শুরু করলো।আরেক অদ্ভূত আনন্দ - অপেক্ষা করে থাকতাম মাসের পয়লা-র জন্য। কোনদিন ভুলতো না "সু"!

এরপর পড়াশোনার উদ্দেশ্যে পাড়ি দিলাম জাপান।জাপান যেন কলম-প্রেমিকদের স্বর্গ !! কি যে সুন্দর সুন্দর পেন। আমি তো এক কথায় পাগল হয়ে যেতাম পেনের দোকানে গেলে।যেমন সুন্দর দেখতে, তেমনি সুন্দর লেখে। স্কলারশিপের পয়সা পেনের দোকানে খরচা করতে বেশ লাগত। ..এছাড়া প্রত্যেক মাসের এক তারিখে  "সু" এর নাম করে নিজেকে একটা পেন কিনে দিতাম।
কত লিখতাম তখন। পাতার পর পাতা চিঠি লিখতাম।নিজে মুখেই বলছি, হাতের লেখা আমার বেশ ভালো ছিল এক কালে।সমস্ত স্কুল মিলে হাতের লেখায় ফার্স্ট প্রাইজ পেয়েছিলাম একবার।এখন স্বপ্ন মনে হয় ।
বিয়ের পর কর্তা ও এমনি হিরে-জহরত-চাইনা-পেন-চাই বউ পেয়ে খুশি হয়ে মাঝে মাঝেই সুন্দর সুন্দর পেন কিনে দিতো।
;-)
এরপর এলো কম্পিউটার এর যুগ । লেখালেখি কমতে লাগলো ।কম্পিউটার এর কিবোর্ডে টকাটক টাইপ করে 'লেখা' শুরু হলো ।ঝকঝকে লেখা ঠিকই তবে কোনো character নেই। হাজার  রকম ফন্ট থেকে বেছে নেওয়া যায় পছন্দ মতন 'হাতের লেখা' কিন্তু কি যেন missing !কোথায় যেন একটা পার্সোনাল টাচের অভাব।
সারাদিনে অনেক কিছু লিখি। প্রচুর ইমেইল লিখি, ব্লগ লিখি, বাজারের লিস্ট লিখি, ফেস বুকে স্টেটাস লিখি ,...আরো কত কিছু লিখি।..কিন্তু সত্তি যেন কিছুই লিখি না। টকাটক টাইপ করতে করতে হাতের লেখাটাও কবে হারিয়ে গেছে।
আজকাল কখনো পেন দিয়ে কিছু লিখলে, কি লিখেছি সেটা বুঝতে নাজেহাল হয়ে যাই...
কাকের ঠ্যাং বকের ঠ্যাং!! 

---পেনগুলো ও যেন কেমন অভিমান করে আসতে আসতে সরে গেল আমার জীবন থেকে।কেউ ভেঙ্গে গেল, কেউ হারিয়ে গেলো, কারুর কালি শুকিয়ে গেলো। ...আসলে এত ভালবাসা থেকে এত অবহেলা ওদের সহ্য হলো না ।

~*~*~*~*~
২০১৫। অনেক বছর বাদের কলেজ reunion ।
আমরা কজন সেই "life long" বন্ধুরা আবার একসাথে হলাম। কেমন আনন্দ হলো সেটা লিখে বোঝাতে পারব না । ঠিক যেন সেই পুরনো দিনগুলো ফিরে পাওয়া।হাহা হিহি । একে অপরের জন্য নানা রকম উপহার । 
সব উপহারের শেষে "সু" ব্যাগ থেকে একটা পেন বার করে দিলো । 

"দয়িতা , তোর এই মাসের পেনটা ".....

মনটা কেমন আনন্দে নেচে উঠলো ! জেগে উঠলো সেই সুপ্ত পেন-প্রেম । 
কিন্তু তার থেকেও অনেক বড় পাওয়া এই মিষ্টি মনে রাখা.....
"life long "!!!!



photo: www.fountainpennetwork.com




Tuesday 5 January 2016

রোগ-ভোগ বয়স-টয়স

ফিরলাম দেশ থেকে। কিছু টুকটাক observation ।

১ : রোগ-ভোগ বয়স-টয়স 
দেশে লোকজন বড্ড তাড়াতাড়ি বুড়ো হয়ে যায়। 
৪০শেই  নিজেকে ভাবে 'বয়স্ক', ৫০শে 'জীবন তো কাটিয়েই  দিলাম', ৬০এ 'retired, অতএব বেঁচে কি লাভ', ৭০এ  'দিন গোনা শুরু', ৮০ তে  'কি যে পাপ করেছি, এখনো বেঁচে ' ইত্যাদি ইত্যাদি ।....
কেন?
হয়ত কিছুটা আবহাওয়া, কিছুটা ১২০ কোটি জনতার চাপ, কিছুটা চোর জোচ্চোর নেতাদের অত্যাচার, কিছুটা বাতাসে অতিরিক্ত দূষণ, কিছুটা তেল ঝাল মশলা খাওয়া দাওয়া, কিছুটা বেয়াম-কসরত করতে কুঁড়েমি, কিছুটা NDTVতে Barkha-র চিত্কার আর কিছুটা বাজারে পেয়াঁজের দাম  .... 
উপরোক্ত কোনটি তাড়াতাড়ি বুড়ো হয়ে যাবার সঠিক root cause, তা অবশ্য বলা মুশকিল!। হয়ত সব কটাই। 
তবে বয়সের বেশ কিছুটাই মানুষের মনে! বয়স হয়ে গেছে "ভেবেই" আমরা অনেক কিছু আর করিনা। আর করিনা বলে আরো বেশি বুড়িয়ে যাই। তার ফলে আরোই কিছু করিনা।
Chicken and Egg situation, আর কি!

এর ওপর আবার আছে রোগ ভোগ এবং রোগ ভোগ সংক্রান্ত আলোচনা!
৩০ থেকেই গ্যাসের ব্যথা, ৪০শে হয় প্রেসার নয় হাঁটু টনটন, ৫০শে জমিয়ে cholesterol কিম্বা সুগার, ৬০এ হার্ট লিভার কিডনি ডাউন, ৭০এ দু চারটে বাইপাস, ৮০তে .... নাহ থাক!
আমি বলছিনা যে রোগ হবে না। হবে হবে। মাথা থাকলেই মাথা ব্যথা হবে!
কিন্তু আমার কথা হলো যে সেইটা নিয়ে সারাক্ষণ আলোচনা করলে তো রোগটা সেরে যাবে না। অন্য গল্প করলে তো রোগটা অল্পক্ষণের জন্য হলেও ভুলে থাকা যাবে। তাই নয় কি?
এবার দেশে একটা get-together এ সব মামা মাসিদের কাকা পিসি জেঠুদের সাথে দেখা হলো। দারুন মজা!
সবাইকে জিগ্গেস করলাম  "কেমন আছো ?"
একই প্রশ্নের অনেক রকম উত্তর পেলাম  !
"এই চলছে!"
"উনি যেমন রেখেছেন!"
"আর ভালো মন্দ!"
"ভালো নেই !"
"খুব পেট নিয়ে ভুগছি!"
"আর এই ভাবেই কাটবে বাকি দিনগুলো!"
ইত্যাদি  .....
এক দুখান "ভালো আছি" উত্তর পেলাম.......
সবাই যে দূর দূর থেকে এসে একসাথে জড়ো হতে পেরেছো, এটাই কি ভালো থাকার যথেষ্ট প্রমান নয়?
আমার ধারণা, নিজের মুখে "ভালো আছি" বলে সেইটা নিজের কানে শুনলে মন ভালো হয়, confidence বাড়ে ! 

যে কোনো আড্ডার বড় টপিক হলো রোগ। এবং শুধু গল্প নয়, পুরো বিবরণ দিয়ে গল্প। যে কোনো রোগের শুরু থেকে শেষ। কে ডাক্তার, কতদুরে তার ক্লিনিক, কটার সময় আসতে বললেন ইত্যাদি থেকে শুরু করে কি ওষুধ, দিনে কবার, কেমন খেতে। কেমন হাঁটুর ব্যথা - চিনচিন নাকি টনটন? কোমর ব্যথাটা - কনকন নাকি কামড়ানো? ব্লাড সুগার ২০০ নাকি ৪৭৫? চোখের অপারেশান- এক চোখে নাকি দুইঅমুকের ছোটকাকার যেটা হয়েছিল নাকি তমুকের মামাতো দিদির মতন? laser নাকি laproscopy?  থাইরয়েড এ ৫০mg নাকি ৭৫? কাঁচা টমেটো খাওয়া বারণ নয়? motion দিনে একবার নাকি বারংবার? 
রোগের গল্প করতে দেখলাম সবাই খুব ভালবাসে। শুধু নিজের না, এমনকি "শুনেছ কল্পনার খুড়তুতো ননদের পিসতুতো বোনের কি বড় অপারেসন হয়েছে?"..এই অবধিও চলে আলোচনা। আরে বাবা, এত দূর সম্পর্কের রোগের গল্প জেনে কার কি লাভ বল দেখি?
এই আড্ডার মধ্যে যার রোগ নেই তার আবার আরেক যন্ত্রণা । একেবারে কিছুই না বলতে পারার ব্যাপক টেনসন। কেমন জানি অন্য আড্ডাবাজরা ভালো চোখে দেখেন না। কি যে বলবেন বুঝে উঠতে পারেন না। বেশ চিন্তিত মুখ । মারাত্মক peer pressure! ওনার টার্ন এলে উনি অনেক ভেবে বলেন 'কদিন ধরে খুব গ্যাসের ব্যথা'। অন্য আড্ডাবাজের যেন একটু হতাশ হন।
"এমনকি" blood sugar ও নেই??? গ্যাস আবার একটা রোগ হলো? কোনো গ্লামার নেই.....দুটো Zantac খাও আর ভুলে যাও....

লক্ষ্য করলাম এত রোগ ভোগ আলোচনা করতে করতে দেশের প্রত্যেকটা মানুষ নিজের অজান্তেই MBBS করে ফেলেছে। রোগের নাম মুখ থেকে বেরোতে না বেরোতে ওষুধের নামের লিস্ট তৈরি । এই-Mycin, তাই-mycin, অমুক-sil, তশুক-gil ....গড়গড় করে বলে দেবে নাম। antibiotic পর্যন্ত prescribe করে দিচ্ছে! আমি হাঁ করে শুনছিলাম। কি বড় বড় কঠিন কঠিন ওষুধের নাম কেমন অনায়াসে মনে রেখেছে সবাই। এত সুন্দর স্মৃতিশক্তি অথচ বাজার থেকে কলা আনতে ভুলে গেলে বলে কিনা "বয়স হয়েছে, কিছুই মনে থাকে না "!
সাথে ঘরোয়া টোটকার ও কিন্তু কমতি নেই!! আরে বাবা ওষুধটা দোকান থেকে আনতে আনতে যদি অন্য কিছু দিয়ে রোগটা সারিয়ে ফেলা যায়, তাই বা মন্দ কি?
এক চামচ মধুতে দু চামচ ঘি মিশিয়ে, কিম্বা চারটে লবঙ্গর সাথে আদা ফুটিয়ে, গেঁদাল পাতার রসের সাথে কাচকলার খোসা বেটে কিম্বা খালি পেটে এক পায়ে দাঁড়িয়ে   .......সর্দি কাশি থেকে শুরু করে গ্যাস, পেট কনকন, হাঁটু টনটন..সব কিছুর ওষুধ আছে সবার কাছে!

আসলে দেশে আমাদের Hobby -র বড়ই অভাব। তাই সমস্ত আলোচনা ঘুরে ফিরে হয় মোদী কিম্বা রোগ ভোগ কিম্বা কাজের মাসিতে এসে থেমে যায়!

সবাইকে অনেক বুঝিয়ে এলাম । কেউ ফোন এ কেমন আছো জিগ্গেস করলে বলবে "এই তো বেশ ভালো আছি"। গতকাল কি কষ্ট হয়েছে তার গল্প বলতে গিয়ে পুরো experienceটা  আবার নতুন করে মনে করবার কোনো প্রয়োজন আছে কি? বরং নিজের মুখে "ভালো আছি" বলে সেইটা নিজের কানে শুনলে মন ভালো হবে, confidence ও বাড়বে! কি জানি, ঠিক বললাম কিনা!
চিয়ার্স!!













PS: টুকটাক observation ২ আসছে : বাঙালির মোবাইল ফোন ব্যবহার !!