Wednesday 23 January 2019

ট্রাম ট্রাভেলস ১

Mariaর  আজও দেরি হয়ে গেলো। উষ্কখুষ্ক চুল কি আর সাধে? যত ভাবে অ্যালার্ম বাজলেই ধড়পড় করে উঠে পড়বে, কিছুতেই হয়না! চোখদুটো বড় জেদি, কিছুতেই খুলবে না। বার বার অ্যালার্ম snooze করতে গিয়ে রোজ একই কেলেঙ্কারি!  ফার্স্ট পিরিওড ফ্রেঞ্চ, Mr. Dubois বড্ড কড়া, অনেকবার ওয়ার্নিং দিয়েছেন । ট্রামটা যে কেন এত আসতে চলে ! ব্যাজার মুখ করে বাইরে তাকিয়ে থাকা ছাড়া কোনো গতি নেই  !

Peter এর অফিসটা একদম সিটি সেন্টারে। সেখানে পার্কিং পাওয়া আর ভগবান পাওয়া একই ব্যাপার।অগত্যা ট্রাম । প্রথমদিকে একদম ভালো লাগতো না। গাড়িতে অনেক আরাম, নিজের মর্জির মালিক।ট্রামের টাইমের সাথে নিজেকে এডজাস্ট করা কি চাট্টিখানি কথা? আজকাল অবশ্য খারাপ লাগে না।, নতুন করে বই পড়ার অভ্যেসটা আবার হচ্ছে । হাতে বই এর টাইটেল , " Life is what you make it", মন্দ লাগছে না ।

Jahan রোজ Edi কে স্কুলে ড্রপ করে। পাঁচ বছরের Edi ট্রামে উঠে এতো কথা বলে যে মাঝে মাঝে Jahan এর লজ্জাই লাগে! গুচ্ছ গুচ্ছ প্রশ্ন। ..মা এটা কেন? মা ওটা কেন? মা এটা কি? মা ওটা কি? আসলে মা ছাড়া কাকেইবা জিজ্ঞেস করবে? Rob তো উইকেন্ড বাবা ! যাগ্গে পুরোনো কথা ভেবে লাভ নেই । Edi কে ড্রপ করে দৌড় লাগাতে হবে দোকান খুলতে। "Edi, please do not press that button!!"

Ben রোজই ভাবে ব্রেকফাস্টে ডিম খাবে না । কিন্তু ঠিক সকালে  উঠে ডবল পোচ না খেলে যেন ভালো লাগেনা। কি একটা missing ! তারপর দৌড়ে ট্রাম ধরার পর কেমন জানি আইঢাই লাগে। আসলে ছোট থেকেই ওর খেতে একটু বেশি ভালো লাগে।তাই ওজন ও আর পাঁচটা ১৬ বছরের ছেলের থেকে বেশি ।সকালে জিম জয়েন করার আইডিয়াটা ওর মায়ের। বসার জায়গা না পেলে ওই ব্যাজার মুখ করে সারা রাস্তা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা। ভাগ্গিস স্মার্ট ফোন আছে !

Tia overseas এসাইনমেন্ট এ আজ তিনমাস ব্যাঙ্গালোরের বাইরে। Rahul শুরু থেকেই বলছিলো, "পারবে না একা থাকতে" ।খানিকটা জোর করেই আসা । রাহুলের মা খুব সাপোর্ট করেছিলেন। বলেছিলেন, "একদম যাবি , এমনি সুযোগ কজন পায়?" Tia এই ট্রামে অফিস যাবার পথে রোজ শাশুড়ি কে গুড মর্নিং কল করে। হাসি হাসি মুখ....."মাম্মিজি আজ ব্রেকফাস্ট মে ফিরসে টোস্ট "

Henk কাল ৭৫ এ পড়লো । দুই ছেলে বৌমা নাতি নাতনি সবাই এসেছিলো। "Lang zal ze leven" গাইলো সবাই মিলে ।খুব মজা হলো । আজকে সত্যি বলতে কি একটু ক্লান্তই  লাগছে। তবে ট্রামে করে এসে Zuiderpark এ হাঁটা রোজকার রুটিন। ঐটা না হলে মন বা শরীর কোনোটাই ভালো থাকে না !

Liz আর Sam পাশাপাশি বসে। একই অফিসে কাজ করে । সেই সূত্রেই আলাপ, আলাপ থেকে ভাব, ভাব থেকে ভালোবাসা। "আজ ডিনার কে বানাবে?" "তুমি গার্ডেন দরজা লাগিয়েছিলে ঠিক করে?" "আজকে আমার টিম ডিনার আছে" "তুমি আজকে লাল টাই কেন পড়লে?" "spotify এ আরিয়ানার  নতুন গানটা শুনেছ?" হাসি খুশি মুখ   ......

...............................................................................................................
Volgende stap Javabrug. Vergeet niet uit te checken met jouw OVchipkart voor je uitstapt!
Next stop is Javabrug. Do not forget to check out with your OV-chipcard

এক ঝটকায় সম্বিৎ ফিরে পেলাম । আমার স্টপ এসে গেছে , নামতে হবে......
আজ বেশ কিছু মাস  হলো ট্রামে অফিস যাতায়াত করছি। ট্রামে কত রকম লোক ওঠে ।সবাই যেন কেমন চেনা চেনা হয়ে গেছে। ....

আবার কাল.........


No comments:

Post a Comment